অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস অষ্টম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায়ে মূলত বাংলার মুঘল ও নবাবকাল, ব্রিটিশ আগমন, অর্থনীতি, সমাজ ও আন্দোলন সংক্রান্ত ঘটনা আলোচনা করা হয়েছে। নিচের প্রশ্ন-উত্তর শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির জন্য সহজ ও সংক্ষেপে সাজানো হয়েছে।
প্রশ্ন: বাংলার ইতিহাসের কোন সময়কাল মুঘল শাসনের আওতায় ছিল?উত্তরঃ ১৫২৬ সাল থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত বাংলার এক বড় অংশ মুঘল শাসনের আওতায় ছিল।
প্রশ্ন: মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের প্রধান কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি, দুর্বল শাসন, স্থানীয় রাজার বিদ্রোহ ও বিদেশি শক্তির আগমন মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের মূল কারণ।
প্রশ্ন: নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে ছিলেন?
উত্তরঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৬-৫৭ সালে বাংলার নবাব ছিলেন এবং তিনি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
প্রশ্ন: প্ল্যাসি যুদ্ধ কখন হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৭৫৭ সালে সিরাজউদ্দৌলা এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে প্ল্যাসি যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
প্রশ্ন: ব্রিটিশরা বাংলায় কীভাবে প্রবেশ করে?
উত্তরঃ ব্রিটিশরা প্রথমে বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলায় প্রবেশ করে, পরে রাজনৈতিক ক্ষমতাও দখল করে।
প্রশ্ন: বাংলার কৃষি ও বাণিজ্যে নদী ও বন্দরের ভূমিকা কী ছিল?
উত্তরঃ নদী ও বন্দর বাংলার কৃষি, বাণিজ্য ও যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রশ্ন: ১৭শ শতাব্দীতে বাংলার শিল্পকলা ও বাণিজ্য কেমন ছিল?
উত্তরঃ জামদানি, মসলিন ও ধাতু শিল্প বিদেশেও প্রসিদ্ধ ছিল, যা বাংলার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছিল।
প্রশ্ন: কারুরাজা আন্দোলন কী?
উত্তরঃ এটি ১৮শ শতাব্দীতে বাংলার গ্রামীণ জনগণের স্বায়ত্তশাসন ও করমুক্তির জন্য সংগঠিত আন্দোলন।
প্রশ্ন: চা-বাগান স্থাপনের ফলে বাংলায় কী পরিবর্তন আসে?
উত্তরঃ চা-বাগান স্থাপনের ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এবং অর্থনীতি ও কৃষি খাতে পরিবর্তন আসে।
প্রশ্ন: ১৮শ শতাব্দীতে বাংলার কৃষকের অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তরঃ কৃষকরা করের বোঝা, দুর্ভিক্ষ ও জমির মালিকানার সমস্যা নিয়ে কষ্ট ভোগ করত।
প্রশ্ন: ইংরেজদের সাথে নবাবদের দ্বন্দ্বের কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ বাণিজ্য ও রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য নবাব এবং ইংরেজদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন: সিপাহী বিদ্রোহের কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ সৈন্যদের বেতন ও অধিকার নিয়ে অসন্তোষের কারণে ১৭৫৭ সালের আগে সিপাহী বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
প্রশ্ন: বাংলার শিক্ষার অগ্রগতি কবে হয়েছিল?
উত্তরঃ মুঘল ও নবাবদের আমলে মাদ্রাসা ও পাঠশালা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষার অগ্রগতি ঘটে।
প্রশ্ন: বাংলার অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি কী ছিল?
উত্তরঃ কৃষি, হস্তশিল্প ও বাণিজ্য বাংলার অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি ছিল।
প্রশ্ন: ব্রিটিশদের আগমনের ফলে বাংলায় রাজনৈতিক পরিবেশ কেমন হয়?
উত্তরঃ ব্রিটিশদের আগমনের ফলে বাংলার রাজনৈতিক ক্ষমতা নবাবদের থেকে কোম্পানির দিকে স্থানান্তরিত হয়।
প্রশ্ন: নবাব বাংলার শাসনে কোন বৈশিষ্ট্য রাখতেন?
উত্তরঃ নবাবরা শাসনকালীন ন্যায়বিচার, কর আদায় এবং বাণিজ্যের তদারকি করতেন।
প্রশ্ন: বাংলার কৃষি সংস্কৃতিতে নদীর ভূমিকা কী ছিল?
উত্তরঃ নদী তীরবর্তী অঞ্চলে সেচ, পরিবহন ও মাছ চাষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত।
প্রশ্ন: ১৭শ শতাব্দীর বাংলার হস্তশিল্পের প্রধান উৎপাদন কী ছিল?
উত্তরঃ জামদানি, মসলিন, সোনা ও রূপার কাজ এবং ধাতু শিল্প প্রধান ছিল।
প্রশ্ন: নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ ব্রিটিশদের ধোঁকা, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও সেনাপতিদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে সিরাজউদ্দৌলা পতিত হন।
প্রশ্ন: বাংলার নদীমুখের বন্দরের গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তরঃ নদীমুখের বন্দরের মাধ্যমে বিদেশি বাণিজ্য ও শস্য পরিবহণ সহজ হয়েছিল।
প্রশ্ন: ব্রিটিশদের শাসনে বাংলায় কৃষকদের কর ব্যবস্থা কেমন ছিল?
উত্তরঃ ব্রিটিশরা জমির উপর অতিরিক্ত কর আরোপ করেছিল, যা কৃষকের কষ্ট বৃদ্ধি করেছিল।
প্রশ্ন: বাংলার প্রধান খাদ্যশস্য কী ছিল?
উত্তরঃ ধান, গম, আখ, ভুট্টা প্রধান খাদ্যশস্য ছিল।
প্রশ্ন: নবাব বাংলার শিল্প ও বাণিজ্যকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিলেন?
উত্তরঃ নবাবরা শিল্প ও বাণিজ্যকে উৎসাহ দিতেন, কর আরোপ ও নিরাপত্তা প্রদান করতেন।
প্রশ্ন: ব্রিটিশদের আগমনের আগে বাংলায় কোন দেশের সাথে বাণিজ্য বেশি হয়েছিল?
উত্তরঃ পোর্টুগিজ, ডাচ, ফরাসি ও চীনের সাথে বাণিজ্য বেশি ছিল।
প্রশ্ন: বাংলার মসলিন শিল্প কেন প্রসিদ্ধ ছিল?
উত্তরঃ মসলিন অতিসুক্ষ্ম ও নরম কাপড় হিসেবে বিশ্ববাজারে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।
প্রশ্ন: নবাব সিরাজউদ্দৌলা কিসের জন্য পরিচিত?
উত্তরঃ তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিরোধের জন্য পরিচিত।
প্রশ্ন: বাংলার নদী বিপর্যয়ের ফলে কৃষকরা কী সমস্যার সম্মুখীন হতেন?
উত্তরঃ বন্যা ও নদী ভাঙনের কারণে কৃষি জমি নষ্ট হতো এবং খাদ্যসংকট সৃষ্টি হতো।
প্রশ্ন: ব্রিটিশ শাসনে বাংলার প্রশাসনিক ব্যবস্থা কেমন হয়?
উত্তরঃ জেলা ও থানা ভিত্তিক প্রশাসন চালু করা হয় এবং কর সংগ্রহের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্রশ্ন: বাংলার বাণিজ্যে চা ও গমের গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তরঃ চা বিদেশে রফতানির মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি করত এবং গম স্থানীয় খাদ্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রশ্ন: কারুরাজা আন্দোলনের প্রভাব কী ছিল?
উত্তরঃ এটি স্থানীয় শাসন ও কৃষকের অধিকার নিশ্চিত করতে সাহায্য করেছিল।
প্রশ্ন: ১৭শ শতাব্দীর বাংলার অর্থনৈতিক শক্তি কোন কারণে বৃদ্ধি পেয়েছিল?
উত্তরঃ সমৃদ্ধ কৃষি, নদী যোগাযোগ ও হস্তশিল্পের কারণে অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছিল।
প্রশ্ন: বাংলার শিক্ষায় মাদ্রাসার ভূমিকা কী ছিল?
উত্তরঃ ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি গণিত, সাহিত্য ও ইতিহাস শেখানোর মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটিয়েছে।
প্রশ্ন: ব্রিটিশদের আগমনের ফলে বাংলার কর ব্যবস্থা কেমন পরিবর্তিত হয়?
উত্তরঃ স্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথার মাধ্যমে কৃষককে স্থায়ীভাবে কর দিতে বাধ্য করা হয়।
প্রশ্ন: বাংলার চা-বাগান কোথায় বেশি তৈরি হয়েছিল?
উত্তরঃ সিলেট, লাকসাম ও সমতটীয় এলাকায় বেশি চা-বাগান তৈরি হয়।
প্রশ্ন: নবাব বাংলার সময় বাণিজ্যিক কর ব্যবস্থা কেমন ছিল?
উত্তরঃ করের হার নির্দিষ্ট ছিল এবং বাণিজ্যিক চুক্তির মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা কর প্রদান করত।
প্রশ্ন: ১৮শ শতাব্দীতে বাংলার কৃষক ও শ্রমিকের জীবিকা কেমন ছিল?
উত্তরঃ কৃষক ও শ্রমিকরা কর ও মজুরির বোঝা সহ্য করতেন, জীবনযাত্রা কঠিন ছিল।
প্রশ্ন: নবাব বাংলার শিল্প ও বাণিজ্যকে কীভাবে উৎসাহিত করতেন?
উত্তরঃ করমুক্ত এলাকা ও বাজার স্থাপন করে শিল্প ও বাণিজ্যকে উৎসাহ দিতেন।
প্রশ্ন: ব্রিটিশদের শাসনের প্রাথমিক প্রভাব কী ছিল?
উত্তরঃ রাজনীতি, কর ব্যবস্থা ও বাণিজ্যে ব্রিটিশদের প্রভাব দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছিল।
প্রশ্ন: বাংলার নদী পরিবেশ কিভাবে অর্থনীতিকে প্রভাবিত করেছিল?
উত্তরঃ নদী যোগাযোগ, বাণিজ্য ও সেচের মাধ্যমে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছিল।
প্রশ্ন: বাংলার হস্তশিল্প ও বাণিজ্য কী কারণে বিশ্ববাজারে প্রসিদ্ধ ছিল?
উত্তরঃ গুণমান, সূক্ষ্মতা ও সমৃদ্ধ ডিজাইনের কারণে।
প্রশ্ন: নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর বাংলায় ক্ষমতা কাদের হাতে চলে যায়?
উত্তরঃ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে ক্ষমতা চলে যায়।
প্রশ্ন: বাংলার অর্থনীতিতে কৃষি চাষের গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তরঃ খাদ্য ও বাণিজ্য উভয়ের জন্য কৃষি প্রধান ভিত্তি ছিল।
প্রশ্ন: ব্রিটিশ শাসনে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন হয়?
উত্তরঃ মাদ্রাসা এবং আধুনিক বিদ্যালয় চালু করা হয়, ইংরেজি শিক্ষার প্রবর্তন হয়।
প্রশ্ন: বাংলার শিল্প ও বাণিজ্যে নদীর ভূমিকা কী ছিল?
উত্তরঃ নদীর মাধ্যমে কাঁচামাল আনা ও তৈরি পণ্য রপ্তানি সহজ হয়।
প্রশ্ন: ১৮শ শতাব্দীতে বাংলার প্রধান সমস্যা কী ছিল?
উত্তরঃ কৃষক দুশ্চিন্তা, কর বোঝা, দুর্ভিক্ষ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রধান সমস্যা ছিল।
