রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। এটি দেশের জ্বালানি খাতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর এলাকায় পদ্মা নদীর তীরে এটি নির্মিত হচ্ছে। রাশিয়ার সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এটি চালু হলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় পরিবর্তন আসবে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর এলাকায়।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উত্তরঃ পদ্মা নদীর তীরে।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কবে প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়?
উত্তরঃ ১৯৬১ সালে পাকিস্তান আমলে পরিকল্পনা করা হয়, তবে কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৩ সালে।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ কবে শুরু হয়?
উত্তরঃ আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু হয় ৩০ নভেম্বর ২০১৭ সালে।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোন দেশের সহায়তায় নির্মিত হচ্ছে?
উত্তরঃ রাশিয়ার সহায়তায়।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনটি?
উত্তরঃ রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটম (Rosatom)।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের মোট ব্যয় কত?
উত্তরঃ প্রায় ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা)।
প্রশ্নঃ রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা কত?
উত্তরঃ ২,৪০০ মেগাওয়াট (প্রতিটি ইউনিট ১,২০০ মেগাওয়াট করে ২টি ইউনিট)।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিট কখন চালু হওয়ার কথা?
উত্তরঃ ২০২৫ সালে (চূড়ান্ত পরীক্ষার পর বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ার পরিকল্পনা)।
প্রশ্নঃ দ্বিতীয় ইউনিট কখন চালু হওয়ার কথা?
উত্তরঃ ২০২৬ সালের মধ্যে।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পে ব্যবহৃত রিঅ্যাক্টরের নাম কী?
উত্তরঃ VVER-1200 (Generation III+ model)।
প্রশ্নঃ VVER-1200 কী ধরনের রিঅ্যাক্টর?
উত্তরঃ এটি একটি প্রেসারাইজড ওয়াটার রিঅ্যাক্টর (PWR)।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পের মালিকানা কার?
উত্তরঃ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (Bangladesh Atomic Energy Commission)।
প্রশ্নঃ প্রকল্পের অর্থায়ন কীভাবে করা হয়েছে?
উত্তরঃ রাশিয়া থেকে ঋণ হিসেবে প্রকল্পের প্রায় ৯০% অর্থায়ন করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পের বিদ্যুৎ কোথায় সরবরাহ করা হবে?
উত্তরঃ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়ে সারাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
প্রশ্নঃ প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করছে কোন মন্ত্রণালয়?
উত্তরঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
প্রশ্নঃ প্রকল্পে কতজন বাংলাদেশি প্রকৌশলী প্রশিক্ষণ পেয়েছেন?
উত্তরঃ প্রায় ১,০০০ জন প্রকৌশলী রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পে কতজন রাশিয়ান বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন?
উত্তরঃ প্রায় ২,০০০ জনেরও বেশি।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পে কতজন বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন?
উত্তরঃ প্রায় ৫,০০০ জনের বেশি স্থানীয় কর্মী যুক্ত।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আয়ুষ্কাল কত বছর?
উত্তরঃ ৬০ বছর (প্রয়োজনে আরও ২০ বছর বাড়ানো যাবে)।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উত্তরঃ দেশের বিদ্যুৎ সংকট দূর করা ও জ্বালানি খাতে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পে উৎপন্ন পারমাণবিক বর্জ্য কে সংরক্ষণ করবে?
উত্তরঃ রাশিয়া বর্জ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের দায়িত্ব নেবে।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পের প্রধান নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী?
উত্তরঃ VVER-1200 রিঅ্যাক্টরে চার স্তরের সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রশ্নঃ প্রকল্পের প্রধান নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোনটি?
উত্তরঃ Bangladesh Atomic Energy Regulatory Authority (BAERA)।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পে পারমাণবিক জ্বালানি কোথা থেকে আসবে?
উত্তরঃ রাশিয়া থেকে।
প্রশ্নঃ প্রথম পারমাণবিক জ্বালানি বাংলাদেশে কবে আনা হয়?
উত্তরঃ ৫ অক্টোবর ২০২৩ সালে।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের প্রথম পারমাণবিক জ্বালানি কার হাতে হস্তান্তর করা হয়?
উত্তরঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিকভাবে কে মূল্যায়ন করে?
উত্তরঃ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পের ভূমি কত একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত?
উত্তরঃ প্রায় ১,০০০ একর।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কত সংখ্যক পরিবারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে?
উত্তরঃ প্রায় ১ কোটি পরিবারের বেশি।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে পারমাণবিক শক্তি কমিশন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ ১৯৭৩ সালে।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পের নির্মাণে পরিবেশগত প্রভাব কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে?
উত্তরঃ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্প বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাবে?
উত্তরঃ উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে শিল্প ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন ঘটাবে।
প্রশ্নঃ রূপপুর প্রকল্পের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য কী?
উত্তরঃ বিদ্যুৎ খাতে জ্বালানি বৈচিত্র্য ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন।
