full scren ads

ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য কি

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ব্যাংকিং লেনদেনকে আরও সহজ ও নিরাপদ করেছে ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড। দুই ধরনের কার্ড দেখতে প্রায় একই হলেও কাজের ধরন, খরচের নিয়ম, নিরাপত্তা এবং সুবিধা–অসুবিধার দিক থেকে একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। অনেকেই কার্ড দুটির পার্থক্য পরিষ্কারভাবে না জানার কারণে ভুল সিদ্ধান্ত নেন। তাই ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মূল পার্থক্যগুলো জেনে রাখা প্রয়োজন।

ডেবিট কার্ড কি

ডেবিট কার্ড হলো এমন একটি ব্যাংকিং কার্ড, যার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা যায় না। কেনাকাটা, ATM থেকে টাকা উত্তোলন, বিল পরিশোধ সবকিছুতেই সরাসরি আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেয়।

ডেবিট কার্ডের বৈশিষ্ট্য

  • আপনার নিজের জমা রাখা টাকা ব্যবহার করা হয়

  • অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স না থাকলে লেনদেন সম্ভব নয়

  • কোনো মাসিক বিল বা সুদের চাপ নেই

  • খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব সহজ

  • কার্ড হারালে বা স্ক্যাম হলে অ্যাকাউন্টের টাকা ঝুঁকিতে থাকে

ক্রেডিট কার্ড কি

ক্রেডিট কার্ড হলো ব্যাংকের দেওয়া একটি লোন সুবিধা, যেখানে ব্যাংক আপনাকে একটি নির্দিষ্ট লিমিট পর্যন্ত টাকা ধার দেয়। আপনি মাস শেষে বিল পরিশোধ করলে কোনো সুদ দিতে হয় না। তবে সময়মতো বিল পরিশোধ না করলে সুদ ও লেট ফি দিতে হয়।

ক্রেডিট কার্ডের বৈশিষ্ট্য

  • ব্যাংকের টাকা ধার নিয়ে কেনাকাটা করা যায়

  • নির্দিষ্ট লিমিট পর্যন্ত খরচ করার সুযোগ

  • মাস শেষে বিল পেমেন্ট করতে হয়

  • EMI সুবিধা, ক্যাশব্যাক ও রিওয়ার্ড পয়েন্ট পাওয়া যায়

  • ক্রেডিট স্কোর উন্নত করে

  • বিল দেরি করলে সুদ ও জরিমানা গুনতে হয়

ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের পার্থক্য কি

১. অর্থের উৎস

  • ডেবিট কার্ড: অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা ব্যবহৃত হয়।

  • ক্রেডিট কার্ড: ব্যাংকের দেওয়া ক্রেডিট লিমিট ব্যবহার করা হয়।

২. খরচের সীমা

  • ডেবিট: ব্যালেন্স অনুযায়ী খরচ।

  • ক্রেডিট: ব্যাংকের নির্ধারিত লিমিট পর্যন্ত খরচ।

৩. টাকা কাটা / বিল প্রদানের নিয়ম

  • ডেবিট: লেনদেনের সময়ই টাকা কাটা হয়।

  • ক্রেডিট: মাস শেষে বিল আসে।

৪. সুদ ও চার্জ

  • ডেবিট: কোনো সুদ নেই।

  • ক্রেডিট: সময়মতো বিল না দিলে সুদ + লেট ফি।

৫. সুবিধা

  • ডেবিট: খরচ নিয়ন্ত্রণ, কোনো ঋণ নেই।

  • ক্রেডিট: EMI, রিওয়ার্ড, ক্যাশব্যাক, জরুরিতে টাকা ব্যবহারের সুবিধা।

৬. নিরাপত্তা ঝুঁকি

  • ডেবিট: কার্ড ক্লোনিং বা স্ক্যামে অ্যাকাউন্টের টাকা ঝুঁকিতে।

  • ক্রেডিট: ব্যাংক তদন্ত ও প্রটেকশন দেয়, ঝুঁকি তুলনামূলক কম।

কোনটি ব্যবহার করবেন

  • আপনি যদি নিজের থাকা টাকার মধ্যে খরচ করতে চান, তবে ডেবিট কার্ড ভালো।

  • জরুরি সময়ে বেশি লিমিট প্রয়োজন হলে, EMI–তে কেনাকাটা করতে চাইলে বা রিওয়ার্ড সুবিধা নিতে চাইলে ক্রেডিট কার্ড উত্তম।

  • তবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার অবশ্যই শৃঙ্খলাপূর্ণ হতে হবে, নয়তো ঋণের চাপ তৈরি হয়।

ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড দুটিই আধুনিক ব্যাংকিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে কাজের ধরন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে এদের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। সঠিকভাবে বুঝে কার্ড নির্বাচন করলে আর্থিক জীবন সহজ, নিরাপদ এবং সুবিধাজনক হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url