full scren ads

ওমরা আর হজের মধ্যে পার্থক্য কি

ইসলামে পবিত্র যাত্রা বা তাওয়াফের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো হজ এবং ওমরা। যদিও এগুলো একই ধরনের ইবাদত, তবে সময়, ফরজতা, কার্যক্রম এবং উদ্দেশ্যের দিক থেকে অনেক পার্থক্য রয়েছে। অনেক মুসলিম নতুনদের জন্য বিভ্রান্তি থাকে কোনটা কখন পালন করা উচিত। এই আর্টিকেলে আমরা হজ ও ওমরার মধ্যে সব গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছি।

ওমরা আর হজের মধ্যে পার্থক্য কি

হজ কি

হজ কয়েকদিন ধরে চলে, হজ একটি নির্দিষ্ট সময়ে পালন করতে হয়। এটি হয় ইসলামিক মাস জিলহজ্জের ৮–১২ তারিখের মধ্যে। এই সময়ে মিনায় অবস্থান, আরাফাতের খুতবা, এবং নাজরানার পাথর নিক্ষেপ ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

  • মিনা ও আরাফাতের অবস্থান: এখানে আল্লাহর কাছে দোয়া এবং তওবা করা হয়।

  • পাথর নিক্ষেপ (জামরাত): শয়তানের প্রলোভনকে প্রতীকীভাবে প্রতিহত করা।

  • তাওয়াফ ও সাঈ: কাবার চারপাশে ঘূর্ণন এবং সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সাঈ।

ওমরা কি

ওমরা সাধারণত কয়েক ঘণ্টা থেকে এক দিনেই শেষ হয়। ওমরার মূল কার্যক্রম হলো:

  • তাওয়াফ: কাবার চারপাশে সাতবার ঘূর্ণন করা।

  • সাঈ: সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সাতবার দৌড়ানো বা হালকা হাঁটা।

এই কারণে হজ অনেক বেশি সময়সাপেক্ষ এবং বিশদভাবে রীতিনীতির সাথে সম্পন্ন হয়, যেখানে ওমরা তুলনামূলকভাবে ছোট, সহজ এবং দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।

উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব

হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম, যা মুসলিমদের আধ্যাত্মিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। হজ শুধু আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম নয়, বরং মুসলিম সমাজে একতা এবং সমতার প্রতীক।

ওমরা মূলত আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য পালন করা হয়। এটি ব্যক্তিগত ইবাদত এবং অতিরিক্ত রূহানী প্রশান্তি অর্জনের সুযোগ দেয়।

পুনরাবৃত্তি

হজ বছরে একবার নির্দিষ্ট সময়ে পালন করা যায়। এক মুসলিম জীবনকাল জুড়ে সাধারণত একবার হজ করা যথেষ্ট।
ওমরা ইচ্ছামতো একাধিকবার করা সম্ভব। মুসলিমরা ওমরা করে আল্লাহর কাছে নিজের ইবাদত বৃদ্ধি করতে পারেন এবং অতিরিক্ত নেক কাজ সম্পন্ন করতে পারেন।

হজ এবং ওমরার সাধারণ বিভ্রান্তি

অনেকেই ভুল ভাবেন যে ওমরা হজের একটি অংশ। আসলে, ওমরা এবং হজ পৃথক ইবাদত। ওমরা হজের আগে, পরে বা অন্য সময়ে করা যায়। যদিও উভয় ইবাদতে তাওয়াফ এবং সাঈ রয়েছে, হজের বিশদ কার্যক্রম, ফরজতা এবং সময় নির্দিষ্ট থাকায় এটি আলাদা।

হজ এবং ওমরার সময়ের পার্থক্য

হজ একটি নির্দিষ্ট সময়ে পালন করতে হয়। এটি হয় ইসলামিক মাস জিলহজ্জের ৮–১২ তারিখের মধ্যে। এই সময়ে মিনায় অবস্থান, আরাফাতের খুতবা, এবং নাজরানার পাথর নিক্ষেপ ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
অন্যদিকে, ওমরা যেকোনো সময়ে করা যায়। এটি কোনো নির্দিষ্ট মাস বা সময়ের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়, তাই মুসলিমরা বছরের যেকোনো সময়ে ওমরা করতে পারেন।

ফরজতা ও নফলের পার্থক্য

হজ মুসলিমদের জন্য ফরজ, অর্থাৎ জীবনে অন্তত একবার সক্ষম হলে হজ করা বাধ্যতামূলক। সক্ষমতা বলতে বোঝানো হয় অর্থ, স্বাস্থ্য এবং নিরাপদ ভ্রমণের যোগ্যতা। হজ না করা গরীব বা অসুস্থদের জন্য ফরজ নয়।

ওমরা, অন্যদিকে, নফল বা সুন্নাত। এটি ইচ্ছামতো করা যায় এবং হজের মতো জীবন-ফরজ নয়। মুসলিমরা অতিরিক্ত ইবাদত, আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং আত্মশুদ্ধির জন্য ওমরা করতে পারেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url