গ্রহ ও নক্ষত্রের মধ্যে পার্থক্য কি
আকাশবিজ্ঞান ও মহাকাশ বিজ্ঞান অধ্যয়নে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গ্রহ এবং নক্ষত্র। সাধারণ মানুষ প্রায়ই এই দুইটি শব্দকে একই অর্থে বোঝে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এদের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। গ্রহ এবং নক্ষত্রের মূল বৈশিষ্ট্য, গঠন, উত্স, আলো উৎপাদন ও কক্ষপথের দিক থেকে একে অপরের থেকে আলাদা। মহাকাশের এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বস্তু বোঝা হলে আমরা সৌরজগত, তারার সৃষ্টি এবং মহাবিশ্বের কার্যপ্রণালী আরও সহজে বুঝতে পারি।
গ্রহ কী
গ্রহ হলো এমন এক মহাকাশীয় বস্তু যা নিজের আলো উৎপাদন করে না এবং একটি নক্ষত্রের চারপাশে কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান থাকে।
-
উদাহরণ: পৃথিবী, বৃহস্পতি, মঙ্গল, শনি।
-
গ্রহ সাধারণত কঠিন বা গ্যাসীয় গঠনযুক্ত হতে পারে।
-
গ্রহ নিজে আলো জ্বালায় না, বরং নক্ষত্রের আলো প্রতিফলিত করে।
-
এটি নক্ষত্রের চারপাশে স্থিতিশীল কক্ষপথে ঘুরে।
-
গ্রহের কক্ষপথ, আকার এবং ঘূর্ণন গতি বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী আলাদা হয়।
নক্ষত্র কী
নক্ষত্র হলো এমন একটি প্রাকৃতিক মহাকাশীয় বস্তু যা নিজের আলো এবং তাপ উৎপন্ন করে।
-
উদাহরণ: সূর্য, বুধরূপী নক্ষত্র, রাশিচক্রের তারাগুলো।
-
নক্ষত্র মূলত হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের প্রাকৃতিক নিউক্লিয়ার ফিউশনের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করে।
-
এটি নিজেই আলোকিত, তাই মহাকাশে নিজস্ব আলো ছড়িয়ে দেয়।
-
নক্ষত্রের আকার সাধারণত গ্রহের তুলনায় অনেক বড় এবং এটি মহাবিশ্বে হাজার কোটি বছর ধরে বিদ্যমান থাকে।
গ্রহ ও নক্ষত্রের মধ্যে পার্থক্য কি
-
আলো উৎপাদন: গ্রহ নিজে আলো উৎপন্ন করে না; নক্ষত্র নিজেই আলো উৎপন্ন করে।
-
কক্ষপথ: গ্রহ নক্ষত্রের চারপাশে ঘূর্ণায়মান; নক্ষত্র স্থিতিশীল বা তারার কক্ষপথে নিজেই স্থিত।
-
গঠন ও আকার: গ্রহ তুলনামূলক ছোট এবং কঠিন বা গ্যাসীয়; নক্ষত্র বড়, গ্যাসীয় এবং তাপশক্তি উৎপন্ন।
-
উদাহরণ: গ্রহ – পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি; নক্ষত্র – সূর্য, সাইরিয়াস, বেটেলজুস।
-
ভূমিকা: গ্রহ জীবন ধারণ বা মহাকাশের সিস্টেমের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ; নক্ষত্র মহাকাশে শক্তি উৎপাদন ও সৌরজগতের কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।