full scren ads

আটা আর ময়দার মধ্যে পার্থক্য কি

গম থেকে তৈরি দুটি পরিচিত খাদ্য উপাদান হলো—আটা এবং ময়দা। অনেকেই মনে করেন দুটো একই, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এদের গঠন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পুষ্টিগুণ এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। রান্নার দুনিয়ায় আটা সাধারণত রুটি বা চাপাটি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, আর ময়দা ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন বেকারি, নান, সমুচা বা পাউরুটি তৈরিতে। তাই এই আর্টিকেলে আমরা আটা ও ময়দার বিস্তারিত পার্থক্য সহজ ভাষায় তুলে ধরলাম।

আটা কি

আটা হলো সম্পূর্ণ গমের দানা পিষে তৈরি একটি মোটা দানাযুক্ত ময়দা। এতে গমের খোসা (Bran), আঁশ (Fiber), ভিটামিন, খনিজ উপাদান ও স্বাভাবিক তেল–সবই বজায় থাকে। তাই আটা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং হজমের জন্যও উপকারী।

আটার রং সাধারণত একটু খয়েরি বা ঘন অফ-হোয়াইট হয়। দানাগুলো খুব সূক্ষ্ম নয়, যা রুটি তৈরির সময় ডো-কে শক্তিশালী করে এবং রুটি নরম হলেও অতিরিক্ত ফেঁপে ওঠে না।

আটার প্রধান বৈশিষ্ট্য

  • পুরো গমের দানা দিয়ে তৈরি

  • রং খানিকটা খয়েরি

  • আঁশ ও পুষ্টিগুণ বেশি

  • হজমে সহায়ক

  • রুটি তৈরিতে আদর্শ

আটার সাধারণ ব্যবহার

  • রুটি / চাপাটি

  • লাচ্ছা পরোটা

  • আটা হালুয়া

  • বিস্কুট (হোল গ্রেইন)

  • ডায়েট-ফ্রেন্ডলি খাবার

ময়দা কি

ময়দা হলো গম থেকে খোসা ও আঁশ আলাদা করে খুব সূক্ষ্মভাবে পিষে তৈরি সাদা, নরম গুঁড়া। প্রক্রিয়াজাতকরণের ফলে এতে ফাইবার কমে যায় এবং রং হয় অনেকটা চকচকে সাদা। ময়দা দিয়ে তৈরি খাবারগুলো সাধারণত নরম, স্পঞ্জি ও ফুলকা হয়, তাই বেকিংয়ে ময়দার ব্যবহার বেশি।

তবে ময়দায় ফাইবার কম থাকায় এটি হজমে তুলনামূলক কম সহায়ক এবং বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হতে পারে।

ময়দার প্রধান বৈশিষ্ট্য

  • খুব সাদা ও নরম

  • আঁশ কম

  • সূক্ষ্ম গুঁড়া

  • নরম ও ফুলকা খাবার তৈরি হয়

  • হজম ধীরগতির

ময়দার সাধারণ ব্যবহার

  • কেক, পাউরুটি

  • বিস্কুট

  • নান, পরোটা

  • সিঙ্গারা, সমুচা

  • পেস্ট্রি ও বেকারি আইটেম

আটা ও ময়দার মধ্যে পার্থক্য কি

আটা হলো সম্পূর্ণ গম পিষে তৈরি, আর ময়দা হলো গমের খোসা ও ফাইবার বাদ দিয়ে তৈরি। আটা পুষ্টিতে সমৃদ্ধ ও আঁশ বেশি, যেখানে ময়দা খাবারকে নরম করে কিন্তু পুষ্টিগুণ কম।

আটার রং খানিকটা ঘোলা বা খয়েরি আর ময়দা থাকে উজ্জ্বল সাদা। আটার খাবার শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যকর, ময়দার খাবার দেখতে আকর্ষণীয় ও নরম হলেও অতিরিক্ত সেবন স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে কোনটি ভালো

স্বাস্থ্যের জন্য আটা সবসময় ময়দার চেয়ে ভালো।

  • এতে ফাইবার বেশি, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।

  • রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

  • দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।

  • ওজন কমাতে সাহায্য করে।

তবে ময়দা মাঝে মাঝে খাওয়া যায়, কিন্তু নিয়মিত খেলে হজমের সমস্যা, গ্যাস, অম্বল এবং শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি প্রবেশ করতে পারে।

আটা ও ময়দা দুটিই গম থেকে তৈরি হলেও তাদের গঠন, পুষ্টি, ব্যবহার ও স্বাস্থ্যের প্রভাব একেবারে আলাদা। আটা হলো স্বাস্থ্যসম্মত, প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর, আর ময়দা হলো সূক্ষ্ম, নরম এবং বিভিন্ন বেকারি খাবার তৈরির জন্য উপযোগী। দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে আটা ব্যবহার করা ভাল, আর ময়দা সীমিত পরিমাণে খাওয়াই উত্তম।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url