এনজিও গ্রাফি ও এনজিও প্লাস্টির মধ্যে পার্থক্য কি
হৃদরোগ বা হার্টের ধমনীতে ব্লকেজ আজকাল একটি সাধারণ সমস্যা। এই ব্লকেজ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয় এনজিওগ্রাফি ও এনজিওপ্লাস্টি। নামের মিল থাকলেও এদের উদ্দেশ্য, কার্যপ্রণালী এবং ফলাফলে রয়েছে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য।
এই আর্টিকেলে আমরা সহজ ভাষায় জেনে নেব এনজিওগ্রাফি কী, এনজিওপ্লাস্টি কী, এবং দুটির মূল পার্থক্য কোথায়।
এনজিওগ্রাফি কি
এনজিওগ্রাফি (Angiography) হলো একটি ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা, যার মাধ্যমে রক্তনালীতে ব্লক বা সংকোচন আছে কিনা তা জানা যায়। হার্টে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা হার্ট অ্যাটাকের সন্দেহ হলে প্রথমেই এই পরীক্ষা করা হয়।
এনজিওগ্রাফির উদ্দেশ্য
-
ধমনীর ব্লকেজ আছে কিনা জানা
-
ব্লকের অবস্থান ও মাত্রা নির্ণয়
-
হৃদরোগের কারণ চিহ্নিত করা
-
চিকিৎসা পরিকল্পনা ঠিক করা
এনজিওগ্রাফির কিভাবে করা হয়
হাত বা পায়ের ধমনীর মাধ্যমে একটি পাতলা টিউব (ক্যাথোটার) ঢুকিয়ে রক্তনালীতে বিশেষ ডাই ইনজেক্ট করা হয়। এরপর এক্স-রে বা ইমেজিংয়ের মাধ্যমে রক্তপ্রবাহ দেখা হয়।
এনজিওপ্লাস্টি কি
এনজিওপ্লাস্টি (Angioplasty) হলো চিকিৎসা বা থেরাপি। এটি মূলত রক্তনালীর ব্লকেজ দূর করে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করে।
যেখানে এনজিওগ্রাফি রোগ নির্ণয় করে, সেখানে এনজিওপ্লাস্টি সমস্যার চিকিৎসা করে।
এনজিওপ্লাস্টির উদ্দেশ্য
-
ধমনীর ব্লক সরানো
-
রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক করা
-
বুকে ব্যথা ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমানো
এনজিওপ্লাস্টির কিভাবে করা হয়
ধমনীতে একটি বেলুনসহ ক্যাথোটার ঢুকিয়ে ব্লক এলাকায় পৌঁছে বেলুন ফুলিয়ে রক্তপ্রবাহের পথ পরিষ্কার করা হয়।
অনেক ক্ষেত্রে পরে স্টেন্ট (ধাতব জাল) বসানো হয় যাতে ধমনী আবার সংকুচিত না হয়।
এনজিওগ্রাফি ও এনজিওপ্লাস্টির মধ্যে পার্থক্য কি?
কাজের ধরন
-
এনজিওগ্রাফি: পরীক্ষা
-
এনজিওপ্লাস্টি: চিকিৎসা
প্রধান উদ্দেশ্য
-
এনজিওগ্রাফি: ব্লক আছে কিনা দেখা
-
এনজিওপ্লাস্টি: ব্লক সরিয়ে পথ পরিষ্কার করা
স্টেন্ট ব্যবহারের বিষয়
-
এনজিওগ্রাফিতে স্টেন্ট ব্যবহৃত হয় না
-
এনজিওপ্লাস্টিতে প্রয়োজনে স্টেন্ট বসানো হয়
সময়
-
এনজিওগ্রাফি: কম সময় লাগে
-
এনজিওপ্লাস্টি: তুলনামূলক বেশি সময় লাগে
ঝুঁকি
-
এনজিওগ্রাফি: ঝুঁকি খুবই কম
-
এনজিওপ্লাস্টি: সামান্য বেশি ঝুঁকি থাকে, কারণ এটি চিকিৎসা পদ্ধতি
অনেক ক্ষেত্রে এনজিওগ্রাফি করার সময় যদি গুরুতর ব্লক ধরা পড়ে, তাহলে চিকিৎসক রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে সঙ্গে সঙ্গে এনজিওপ্লাস্টি করে থাকেন। এটিকে “এক-সেটআপ প্রসিডিউর” বলা হয়।