অধিবর্ষ কি | অধিবর্ষ কাকে বলে | অধিবর্ষ বলতে কি বুঝায়
পৃথিবী সূর্যের চারদিকে একবার ঘুরে আসতে মোটামুটি ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড সময় নেয়। আমরা সাধারণত বছরের হিসাব করি ৩৬৫ দিন ধরে, কিন্তু প্রকৃত সময়ের সঙ্গে এই হিসাবের সামান্য পার্থক্য প্রতিবছর জমতে জমতে চার বছরে প্রায় একদিন হয়ে যায়। এই অতিরিক্ত সময়ের হিসাব রাখতে বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন এক বিশেষ বর্ষ—যাকে বলা হয় অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার। অধিবর্ষে ফেব্রুয়ারি মাসে একটি অতিরিক্ত দিন যুক্ত হয়, অর্থাৎ ২৯ ফেব্রুয়ারি, যা সাধারণ বছরে থাকে না। এই একদিনের সংযোজন পৃথিবীর প্রাকৃতিক গতির সঙ্গে আমাদের ক্যালেন্ডার সময়ের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ইতিহাস, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং ক্যালেন্ডার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অধিবর্ষ একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, যা প্রাচীন সময় থেকেই মানুষের সময় গণনার অংশ হয়ে রয়েছে। এই নিবন্ধে আমরা অধিবর্ষ কী, এটি কেন প্রয়োজন, কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, ইতিহাসে এর উৎপত্তি ও বিবর্তন, এবং আধুনিক সমাজে এর গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
অধিবর্ষ কি
অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার হলো একটি বিশেষ বর্ষ, যা প্রতি চার বছর পরপর আসে এবং এতে ৩৬৫ দিনের পরিবর্তে ৩৬৬ দিন থাকে। এই অতিরিক্ত দিনটি যুক্ত হয় ফেব্রুয়ারি মাসে—যা সাধারণ বছরগুলোতে ২৮ দিনে শেষ হয়, কিন্তু অধিবর্ষে তা হয় ২৯ দিন।
পৃথিবী সূর্যের চারদিকে একবার ঘূর্ণন সম্পন্ন করতে আসলে লাগে প্রায় ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড। কিন্তু আমরা যে ক্যালেন্ডার ব্যবহার করি তা ৩৬৫ দিনের হিসাব ধরে তৈরি। এই অতিরিক্ত সময় প্রতিবছর জমতে জমতে ৪ বছরে প্রায় একদিন হয়। সেই অতিরিক্ত সময়টিকে পূরণ করতেই প্রতি চার বছর পর পর ফেব্রুয়ারিতে একটি দিন বাড়িয়ে ২৯ দিন করা হয়।
এইভাবেই অধিবর্ষ আমাদের সময় গণনাকে প্রকৃত সৌরচক্রের সঙ্গে সঠিকভাবে মিলিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
অধিবর্ষ কাকে বলে
অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার (Leap Year) হলো এমন একটি বছর, যেটিতে ৩৬৬ দিন থাকে। সাধারণ বছরে ৩৬৫ দিন থাকলেও, প্রতি চার বছর পরপর একটি দিন (২৯ ফেব্রুয়ারি) বাড়ানো হয় যাতে ক্যালেন্ডার বছরের সাথে প্রকৃত সৌর বছরের সামঞ্জস্য বজায় থাকে। সৌর বছর আসলে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড। এই অতিরিক্ত সময় পূরণ করতে প্রতি চার বছর অন্তর এক দিন যোগ করা হয়, ফলে সেই বছরটি অধিবর্ষ হিসেবে গণ্য হয়।
অধিবর্ষ চেনার নিয়ম
যে কোনো বছর ৪ দ্বারা বিভাজ্য হলে সেটি অধিবর্ষ হতে পারে। তবে, যদি বছরটি ১০০ দ্বারা বিভাজ্য হয়, তাহলে সেটি অধিবর্ষ হবে না — যদি না তা ৪০০ দ্বারা বিভাজ্য হয়।
উদাহরণ:
-
২০২০ সাল: ৪ দ্বারা বিভাজ্য → অধিবর্ষ
-
১৯০০ সাল: ১০০ দ্বারা বিভাজ্য কিন্তু ৪০০ দ্বারা নয় → অধিবর্ষ নয়
-
২০০০ সাল: ১০০ ও ৪০০ উভয় দ্বারা বিভাজ্য → অধিবর্ষ
অধিবর্ষে ফেব্রুয়ারি মাসে ২৯ দিন থাকে।
অধিবর্ষ বলতে কি বুঝায়
অধিবর্ষ বলতে এমন একটি বছরকে বোঝায়, যেখানে মোট দিন থাকে ৩৬৬টি। সাধারণ বছরে দিন থাকে ৩৬৫টি, কিন্তু প্রতি ৪ বছর পরপর একটি অতিরিক্ত দিন (২৯ ফেব্রুয়ারি) যুক্ত হয়, যাতে ক্যালেন্ডার বছরের সঙ্গে প্রকৃত সৌর বছরের সময় মেলানো যায়। এই অতিরিক্ত দিনের বছরকেই অধিবর্ষ বলা হয়। এতে ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনের পরিবর্তে ২৯ দিনে হয়।
অধিবর্ষ বের করার নিয়ম
অধিবর্ষ হলো এমন একটি বছর, যেখানে একটি অতিরিক্ত দিন যুক্ত হয়, অর্থাৎ মোট দিন হয় ৩৬৬টি। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে ২৮ দিনের পরিবর্তে ২৯ দিন হয়ে থাকে অধিবর্ষে। এই একটি অতিরিক্ত দিন যুক্ত করার উদ্দেশ্য হলো সৌর বছর ও ক্যালেন্ডার বছরের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা।
অধিবর্ষ নির্ধারণের জন্য একটি নির্দিষ্ট গাণিতিক নিয়ম অনুসরণ করা হয়। এটি খুবই সহজ এবং নিম্নরূপ:
-
যে কোনো বছর যদি ৪ দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য হয়, তবে সেটি অধিবর্ষ হতে পারে।
-
যদি সেই বছরটি ১০০ দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সেটি অধিবর্ষ নয়।
-
তবে যদি বছরটি ৪০০ দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সেটি অবশ্যই অধিবর্ষ।
কিছু উদাহরণ
-
২০২৪ সাল → ৪ দ্বারা বিভাজ্য → অধিবর্ষ ✅
-
১৯০০ সাল → ১০০ দ্বারা বিভাজ্য কিন্তু ৪০০ দ্বারা নয় → অধিবর্ষ নয় ❌
-
২০০০ সাল → ৪০০ দ্বারা বিভাজ্য → অধিবর্ষ ✅
-
২০২3 সাল → ৪ দ্বারা বিভাজ্য নয় → অধিবর্ষ নয় ❌
এক অধিবর্ষ সমান কত দিন
এক অধিবর্ষ (Leap Year) সমান ৩৬৬ দিন।
সাধারণ বছরে দিন থাকে ৩৬৫টি, কিন্তু প্রতি ৪ বছরে একবার করে ফেব্রুয়ারি মাসে একদিন (২৯ ফেব্রুয়ারি) যোগ হওয়ার কারণে অধিবর্ষে দিন হয় ৩৬৬টি। এই অতিরিক্ত দিনটি যোগ করা হয় ক্যালেন্ডারকে পৃথিবীর সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করার প্রকৃত সময়ের (৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড) সঙ্গে মিলিয়ে রাখতে।
অধিবর্ষ গণনা কখন শুরু হয়
অধিবর্ষ গণনা শুরু হয় জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, খ্রিস্টপূর্ব ৪৫ সালে, রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার প্রথম এটি চালু করেন। পরবর্তীতে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ১৫৮২ সালে চালু হলে, বর্তমান আধুনিক অধিবর্ষের নিয়ম ঠিক করা হয়। এখন প্রতি ৪ বছরে একবার অধিবর্ষ হয়, তবে শতবর্ষের বছর (যেমন: 1900, 2100) অধিবর্ষ হয় না, যদি না সেই বছর ৪০০ দ্বারা বিভাজ্য হয় (যেমন: 1600, 2000)।
অধিবর্ষে ফেব্রুয়ারি মাস কত দিনে হয়
অধিবর্ষে ফেব্রুয়ারি মাস ২৯ দিনে হয়—এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বোঝাতে গেলে আমাদের সময় গণনার পদ্ধতি এবং সৌর বছরের দৈর্ঘ্য সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।
আমরা জানি, পৃথিবী সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে প্রায় ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড সময় লাগে। কিন্তু আমাদের ক্যালেন্ডার বছর ধরা হয় ৩৬৫ দিন। ফলে প্রতি বছর প্রায় ৬ ঘণ্টা করে অতিরিক্ত সময় জমতে থাকে।
এই অতিরিক্ত সময়
৬ ঘণ্টা × ৪ বছর = ২৪ ঘণ্টা = ১ দিন
এই একদিনকে প্রতি ৪ বছর অন্তর ফেব্রুয়ারি মাসে যোগ করে ২৯ দিনে রূপান্তরিত করা হয়। তাই প্রতি ৪ বছরে একবার ফেব্রুয়ারি হয় ২৯ দিনের। এই বছরটিকেই বলা হয় অধিবর্ষ (Leap Year)।
তবে এই নিয়মেও সামান্য অসমতা থেকে যায়। কারণ প্রতি বছর জমা হওয়া অতিরিক্ত সময় ঠিক ৬ ঘণ্টা নয়, বরং একটু কম (৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড)। তাই এই বাড়তি সময় সামঞ্জস্য রাখতে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করা হয়:
-
যে বছর ৪ দ্বারা বিভাজ্য সে বছর অধিবর্ষ।
-
তবে, যদি সে বছর ১০০ দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে তা অধিবর্ষ নয়।
-
কিন্তু যদি ৪০০ দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে তা অধিবর্ষ হবে।
উদাহরণ
-
২০০০ সাল = ৪০০ দ্বারা বিভাজ্য → অধিবর্ষ (ফেব্রুয়ারি ২৯ দিন)
-
১৯০০ সাল = ১০০ দ্বারা বিভাজ্য কিন্তু ৪০০ দ্বারা নয় → অধিবর্ষ নয় (ফেব্রুয়ারি ২৮ দিন)
-
২০২৪ সাল = ৪ দ্বারা বিভাজ্য → অধিবর্ষ (ফেব্রুয়ারি ২৯ দিন)
এইভাবে বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে আমাদের ক্যালেন্ডার পৃথিবীর কক্ষপথের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা হয় এবং ফেব্রুয়ারির ২৯তম দিনটি যুক্ত হয় অধিবর্ষে।