পদার্থ কি | পদার্থ কাকে বলে | পদার্থ বিজ্ঞানের জনক কে

পদার্থ বিজ্ঞানের প্রাচীন থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত গবেষণা মানুষের জীবন এবং প্রকৃতির রহস্য উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পদার্থ হলো আমাদের চারপাশের সমস্ত বস্তু এবং শক্তির মূল উপাদান, যা স্থান, কাল, গতি এবং শক্তির সাথে সম্পর্কিত। এটি কেবল পরীক্ষণযোগ্য বস্তু নয়, বরং বিভিন্ন শক্তির সংযোগ, পরিবর্তন এবং প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের জীবনকে সহজ, সৃজনশীল এবং প্রযুক্তিনির্ভর করেছে। পদার্থবিজ্ঞান আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে মহাকাশের রহস্য পর্যন্ত সবকিছুর ব্যাখ্যা দেয়, যেমন পদার্থের গঠন, শক্তির রূপান্তর, বল, তাপ, তড়িৎ ও চুম্বকীয় ক্ষেত্র। এই গবেষণা মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে কাজ করেছে, যা শুধু বিজ্ঞানের দিক থেকে নয়, শিক্ষাগত ও প্রযুক্তিগত দিক থেকেও বিশাল অবদান রেখেছে। তাই পদার্থকে বোঝা মানে আমাদের চারপাশের পৃথিবী এবং মহাবিশ্বকে আরও গভীরভাবে অনুধাবন করা।

পদার্থ কি, পদার্থ কাকে বলে, পদার্থ বিজ্ঞানের জনক কে

পদার্থ কি

পদার্থ হলো এমন একটি বস্তু যা স্থান দখল করে এবং যার ভর থাকে। এটি দৃশ্যমান বা অদৃশ্য, কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকতে পারে। পদার্থের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এটি ভর এবং আয়তনযুক্ত, এবং এটি শক্তি ও পরিবর্তনের সঙ্গে সংযুক্ত। সহজভাবে বলা যায়, আমাদের চারপাশে যে কোনো বস্তু—পানি, মাটি, বায়ু, ইলেকট্রনিক যন্ত্র সবই পদার্থের উদাহরণ।

পদার্থের বৈশিষ্ট্য

পদার্থের বৈশিষ্ট্য বলতে পদার্থের সেই গুণ বা ধর্মগুলোকে বোঝায়, যার মাধ্যমে আমরা একটি পদার্থকে অন্য পদার্থ থেকে আলাদা করতে পারি। সাধারণভাবে পদার্থের বৈশিষ্ট্য দুই ভাগে ভাগ করা হয়

ভৌত বৈশিষ্ট্য (Physical Properties)

যে বৈশিষ্ট্য পদার্থের রাসায়নিক গঠন পরিবর্তন না করেই বোঝা বা নির্ণয় করা যায়।
উদাহরণঃ

  • অবস্থা → কঠিন, তরল, গ্যাস

  • রং → লাল, নীল, বর্ণহীন ইত্যাদি

  • গন্ধ → যেমন আতরের সুগন্ধ, পেট্রোলের গন্ধ

  • স্বাদ → লবণাক্ত, মিষ্টি, তেতো

  • ঘনত্ব → ভর ÷ আয়তন

  • গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক → যেমন বরফের গলনাঙ্ক ০°সে, জলের স্ফুটনাঙ্ক ১০০°সে

  • কঠোরতা ও নমনীয়তা → লোহা কঠিন, সোনা নমনীয়

  • তড়িৎ ও তাপ পরিবাহিতা → ধাতু তড়িৎ পরিবাহী, কাঠ অপরিবাহী

রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য (Chemical Properties)

যে বৈশিষ্ট্য কেবল পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
উদাহরণঃ

  • দাহ্যতা → কাঠ বা কেরোসিন সহজে জ্বলে

  • অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া → লোহা মরিচা ধরে

  • অম্ল-ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া → চুন (Ca(OH)₂) অম্লের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ তৈরি করে

  • বিষাক্ততা → যেমন কার্বন মনোক্সাইড বিষাক্ত

  • স্থিতিশীলতা → কোন পদার্থ সহজে বিক্রিয়া করে নাকি দীর্ঘসময় অপরিবর্তিত থাকে

  • ভৌত বৈশিষ্ট্য = দেখা, ছোঁয়া বা পরিমাপ করা যায় (রং, স্বাদ, ঘনত্ব ইত্যাদি)।

  • রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য = বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায় (দাহ্যতা, মরিচা ধরা, অম্ল-ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া ইত্যাদি)।

কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য

কঠিন পদার্থ হলো পদার্থের এক অবস্থা যেখানে কণাগুলো ঘনভাবে একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে। এ অবস্থায় পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন থাকে।


১. নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন (Definite Shape and Volume)

  • কঠিন পদার্থের নিজস্ব আকার থাকে।

  • বাইরের কোনো পাত্রে রাখলেও আকার অপরিবর্তিত থাকে।

  • উদাহরণ: কাঠ, পাথর, লোহা।


২. কণার ঘন বিন্যাস (Closely Packed Particles)

  • কঠিন পদার্থে অণু/পরমাণু/আয়ন একে অপরের সাথে খুব ঘনভাবে যুক্ত থাকে।

  • অণুগুলোর মধ্যে আকর্ষণ বল বেশি থাকে।


৩. সংকোচনযোগ্য নয় (Incompressibility)

  • কঠিন পদার্থকে চেপে ধরলেও আয়তন প্রায় অপরিবর্তিত থাকে।

  • কারণ অণুগুলোর মধ্যে ফাঁকফোকর নেই বললেই চলে।


৪. শক্ত অবস্থান (Rigidity)

  • কঠিন পদার্থ শক্ত বা দৃঢ় হয়।

  • বাহ্যিক বল প্রয়োগ করলে সহজে আকার পরিবর্তন করে না।


৫. ঘনত্ব বেশি (High Density)

  • কণাগুলো ঘনভাবে সাজানো থাকায় অধিকাংশ কঠিন পদার্থের ঘনত্ব তরল ও গ্যাসের তুলনায় বেশি।

  • যেমন লোহা পানির চেয়ে ভারী।


৬. কম প্রসারণশীলতা (Low Expansion)

  • উত্তাপে কঠিন পদার্থ সামান্য প্রসারিত হয়।

  • যেমন: রেললাইনের ফাঁক রাখা হয় উত্তাপে প্রসারণের জন্য।


৭. গলনাঙ্ক থাকে (Melting Point)

  • নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কঠিন পদার্থ গলে তরলে পরিণত হয়।

  • যেমন বরফ ০°সে তে গলে।


৮. কঠোরতা (Hardness)

  • কিছু কঠিন পদার্থ খুব শক্ত (হীরা সবচেয়ে কঠিন পদার্থ), আবার কিছু নরম (মোম, মাটি)।


৯. স্থিতিস্থাপকতা (Elasticity)

  • কিছু কঠিন পদার্থ প্রসারিত হয়ে আবার আগের আকারে ফিরে আসে (রাবার, স্প্রিং)।


১০.যান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য

  • নমনীয়তা (Malleability): ধাতুকে পাত বানানো যায় (সোনা, রুপা)।

  • তারণীয়তা (Ductility): ধাতুকে তার বানানো যায় (তামা, অ্যালুমিনিয়াম)।

  • ভঙ্গুরতা (Brittleness): কিছু কঠিন পদার্থ সহজে ভেঙে যায় (কাচ, চক)।

কঠিন পদার্থ = নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন + ঘনভাবে সাজানো কণা + সংকোচনযোগ্য নয় + শক্ত ও দৃঢ় + গলনাঙ্ক নির্দিষ্ট।

তরল পদার্থের বৈশিষ্ট্য

তরল পদার্থ হলো পদার্থের একটি অবস্থা, যেখানে অণুগুলোর মধ্যে আকর্ষণ বল মাঝারি থাকে। এ কারণে তরলের আয়তন নির্দিষ্ট থাকে, কিন্তু আকার নির্দিষ্ট থাকে না


১. নির্দিষ্ট আয়তন (Definite Volume)

  • তরল পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন থাকে।

  • যেমন ১ লিটার পানি যেকোনো পাত্রে রাখলে পরিমাণ একই থাকে।


২. নির্দিষ্ট আকার নেই (No Definite Shape)

  • তরল পদার্থ পাত্রের আকার ধারণ করে।

  • যেমন গ্লাসে পানি রাখলে গ্লাসের আকার নেয়, বোতলে রাখলে বোতলের আকার নেয়।


৩. কণার বিন্যাস (Arrangement of Particles)

  • অণুগুলো ঘনভাবে থাকলেও কঠিনের মতো শক্তভাবে বাঁধা নয়।

  • ফলে তারা পরস্পরের উপর দিয়ে সরে যেতে পারে।


৪. প্রবাহমানতা (Fluidity)

  • তরল পদার্থ সহজে প্রবাহিত হয়।

  • যেমন পানি নদীতে, দুধ গ্লাসে সহজে প্রবাহিত হয়।


৫. সংকোচনযোগ্যতা (Compressibility)

  • তরল পদার্থ সামান্য সংকুচিত হতে পারে, তবে খুব বেশি নয়।


৬. ঘনত্ব (Density)

  • তরলের ঘনত্ব সাধারণত গ্যাসের চেয়ে বেশি, কিন্তু কঠিনের চেয়ে কম।

  • যেমন পানির ঘনত্ব ১ g/cm³।


৭. পৃষ্ঠটান (Surface Tension)

  • তরলের পৃষ্ঠকে পাতলা স্থিতিস্থাপক ঝিল্লির মতো মনে হয়।

  • এর জন্য ছোট পোকা (জল মাকড়সা) পানির উপর হাঁটতে পারে।


৮. সান্দ্রতা (Viscosity)

  • তরলের প্রবাহের প্রতিবন্ধকতাকে সান্দ্রতা বলে।

  • যেমন মধু পানির তুলনায় বেশি সান্দ্র।


৯. প্রসারণ (Expansion)

  • উত্তাপে তরল পদার্থ প্রসারিত হয়।

  • যেমন পানির তাপমাত্রা বাড়ালে আয়তন বাড়ে।


১০. বাষ্পীভবন (Evaporation)

  • তরলের অণুগুলো ধীরে ধীরে পৃষ্ঠ থেকে উড়ে গিয়ে গ্যাসে পরিণত হয়।

  • যেমন কাপড়ে পানি শুকানো।

তরল পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন থাকে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার থাকে না, প্রবাহিত হতে পারে, সামান্য সংকোচনযোগ্য, পৃষ্ঠটান ও সান্দ্রতা থাকে, উত্তাপে প্রসারিত হয় ও বাষ্পীভবন ঘটে।



পদার্থ কাকে বলে

পদার্থ বিজ্ঞান কাকে বলে

মৌলিক পদার্থ কাকে বলে

যৌগিক পদার্থ কাকে বলে

কঠিন পদার্থ কাকে বলে

বায়বীয় পদার্থ কাকে বলে



পদার্থ বিজ্ঞান ইংরেজি কি

পদার্থবিজ্ঞানের ইংরেজি হলো Physics

Physics হলো সেই বিজ্ঞান যা প্রকৃতির মৌলিক কণা, শক্তি, বল, গতি, তাপ, আলো, বিদ্যুৎ, চুম্বকত্ব এবং মহাবিশ্বের গঠন ও গতিবিধি নিয়ে আলোচনা করে। এটি প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের একটি শাখা, যা গণিতের মাধ্যমে বাস্তব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।

পদার্থ বিজ্ঞানের জনক কে

পদার্থবিজ্ঞান মানব সভ্যতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা। এর মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির নিয়ম ও মহাবিশ্বের কার্যপ্রণালী বুঝতে পারি। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছেন আইজ্যাক নিউটন (Isaac Newton)। তিনি ১৬৪৩ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর আবিষ্কার ও গবেষণা আজও পদার্থবিজ্ঞানের মূল স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত।

১. গতি ও বলের সূত্র

নিউটন তিনটি গতি সূত্র প্রণয়ন করেন, যা পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি। এই সূত্রগুলো বল ও গতির সম্পর্ক স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে। প্রথম সূত্রে বস্তুর জড়তা, দ্বিতীয় সূত্রে বল ও ত্বরণের সম্পর্ক এবং তৃতীয় সূত্রে পদার্থের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার নিয়ম তুলে ধরা হয়।

২. মহাকর্ষ নীতি

নিউটন পৃথিবী ও মহাকাশের সব বস্তুর মধ্যে মহাকর্ষ বলের ধারণা প্রবর্তন করেন। এই নীতি ব্যাখ্যা করে কেন পৃথিবী সূর্যের চারপাশে আবর্তিত হয় এবং কেন গ্রহ ও চন্দ্র নির্দিষ্ট কক্ষপথে থাকে।

৩. গণিতের প্রয়োগ

নিউটন পদার্থবিজ্ঞানে ক্যালকুলাস ব্যবহার শুরু করেন, যা পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে অপরিসীম সহায়তা প্রদান করে। গণিতের মাধ্যমে তিনি বল, গতি ও ত্বরণের পরিবর্তন নির্ধারণের পদ্ধতি সুসংহত করেন।

৪. Philosophiæ Naturalis Principia Mathematica

১৬৮৭ সালে নিউটনের লেখা এই গ্রন্থে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের মূল তত্ত্বগুলো উপস্থাপন করেন। এটি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয় এবং বিজ্ঞানীদের জন্য যুগান্তকারী কৃতিত্ব।

আইজ্যাক নিউটনের কাজের ফলে পদার্থবিজ্ঞান কেবল পর্যবেক্ষণমূলক শাস্ত্র নয়, বরং গণিতের সাহায্যে বিশ্লেষণযোগ্য বৈজ্ঞানিক শাখা হিসেবে দাঁড়ায়। তাঁর আবিষ্কার ও সূত্রগুলো আজও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নানা ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। এই কারণে নিউটনকে “আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক” বলা হয়।

আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের জনক কে

ঠিক বলা হলো। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনককে নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে, কারণ বিজ্ঞান একটি ক্রমাগত বিকাশমান শাখা। তবে সাধারণভাবে আলবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein)-কে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক হিসেবে ধরা হয়।

কারণসমূহ

  1. আপেক্ষিকতা তত্ত্ব (Theory of Relativity)
    আইনস্টাইন প্রথমবার প্রকাশ করেন বিশেষ আপেক্ষিকতা (Special Relativity, ১৯০৫), যা সময়, স্থান ও বেগের সম্পর্ক নতুনভাবে ব্যাখ্যা করে। পরে তিনি সাধারণ আপেক্ষিকতা (General Relativity, ১৯১৫) প্রণয়ন করেন, যা মহাকর্ষকে স্পেস-টাইমের বাঁকনির্ভর শক্তি হিসেবে দেখায়।

  2. ফোটন তত্ত্ব ও কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান
    তিনি প্রস্তাব করেন যে আলো কণিকা (ফোটন) আকারেও আচরণ করে। এটি কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করে।

  3. শক্তি ও ভরের সম্পর্ক
    বিখ্যাত সূত্র E = mc² (শক্তি = ভর × আলোর বেগ²) পদার্থবিজ্ঞানে ভরের ও শক্তির গভীর সম্পর্ক তুলে ধরে।

আইনস্টাইনের কাজের ফলে পদার্থবিজ্ঞান শুধুমাত্র নিউটনের ক্লাসিকাল ধারা নয়, বরং সামগ্রিক মহাবিশ্বের গতিবিধি ও কোয়ান্টাম জগতের রহস্য উন্মোচনের আধুনিক ভিত্তি পায়। এজন্য তাঁকে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক হিসেবে সম্মানিত করা হয়।

তরল পদার্থ পরিমাপের একক কি

তরল পদার্থ পরিমাপের জন্য সাধারণত আয়তনের একক ব্যবহার করা হয়, কারণ তরলের নির্দিষ্ট আকার নেই, শুধু নির্দিষ্ট আয়তন থাকে।

আন্তর্জাতিক একক (SI Unit)

তরল পদার্থের পরিমাপের একক হলো লিটার (L) এবং কিউবিক মিটার (m³)

  • ১ লিটার (L) = ১০০০ মিলিলিটার (mL)

  • ১ ঘন মিটার (m³) = ১০০০ লিটার (L)

দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত একক

  • লিটার (L)

  • মিলিলিটার (mL)

  • গ্যালন (gallon)

  • কোয়ার্ট (quart)

বিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানে তরল পদার্থের পরিমাণ পরিমাপ করতে সাধারণত কিউবিক মিটার (m³) ব্যবহার করা হয়, আর দৈনন্দিন জীবনে লিটার (L) সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।

২০১২ সালের পদার্থ বিজ্ঞান বই pdf

২০১২ সালের পদার্থবিজ্ঞান বই (PDF) মূলত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত পাঠ্যপুস্তক। এটি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রকাশিত হয় এবং সে সময়কার নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী সাজানো হয়েছিল। বইটিতে পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক ধারণাগুলো সহজভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানের তাত্ত্বিক জ্ঞান ও বাস্তব প্রয়োগ দুটোই বুঝতে পারে।

২০১২ সালের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের কিছু বৈশিষ্ট্য

  • এতে পদার্থবিজ্ঞানের প্রাথমিক ধারণা, বল ও গতি, তাপ, আলো, বিদ্যুৎ, চৌম্বকত্ব এবং আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত ছিল।

  • প্রতিটি অধ্যায়ে সৃজনশীল প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরচিত্রভিত্তিক ব্যাখ্যা দেওয়া ছিল।

  • শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে পদার্থবিজ্ঞানের সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে।

  • বোর্ড পরীক্ষার উপযোগী উদাহরণ ও অনুশীলনী যোগ করা হয়েছিল।

  • অনেক জায়গায় তত্ত্ব ও বাস্তব পরীক্ষার সমন্বয় করা হয়েছে, যাতে ল্যাবরেটরিতে প্রয়োগ সহজ হয়।

মৌলিক ও যৌগিক পদার্থের ৫ টি পার্থক্য

পদার্থবিজ্ঞানের জগতে আমরা নানারকম পদার্থ দেখতে পাই। এই পদার্থগুলো গঠন ও বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায় মৌলিক পদার্থ এবং যৌগিক পদার্থ। মৌল হলো পদার্থের সবচেয়ে সরল রূপ যা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আর বিভক্ত করা যায় না, আর যৌগ হলো একাধিক মৌল নির্দিষ্ট অনুপাতে যুক্ত হয়ে গঠিত নতুন পদার্থ। মৌলিক ও যৌগিক পদার্থের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে, যা নিচে তুলে ধরা হলো।

১. গঠনগত দিক থেকে

মৌলিক পদার্থ কেবল এক ধরনের পরমাণু দিয়ে গঠিত, যেমন অক্সিজেন (O), হাইড্রোজেন (H), লোহা (Fe)। অন্যদিকে যৌগিক পদার্থ গঠিত হয় দুই বা ততোধিক মৌল নির্দিষ্ট অনুপাতে যুক্ত হয়ে, যেমন পানি (H₂O), লবণ (NaCl)।

২. রাসায়নিক বিভাজন ক্ষমতা

মৌলকে আর কোনো রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় বিভক্ত করা যায় না। কিন্তু যৌগ রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ভেঙে আবার মৌল বা সরল পদার্থে বিভক্ত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পানি (H₂O) ইলেক্ট্রোলাইসিস প্রক্রিয়ায় ভেঙে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন মৌল তৈরি হয়।

৩. সংখ্যার পার্থক্য

প্রকৃতিতে মৌলের সংখ্যা সীমিত, বর্তমানে প্রায় ১১৮টি মৌল আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু যৌগের সংখ্যা অসংখ্য এবং নতুন নতুন যৌগ প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে, যা আমাদের জীবনে নানা কাজে ব্যবহৃত হয়।

৪. উদাহরণ

মৌলিক পদার্থের উদাহরণ হলো— হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, লোহা। অপরদিকে যৌগিক পদার্থের উদাহরণ হলো— পানি, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, সাধারণ লবণ।

৫. ভৌত বৈশিষ্ট্য

মৌলের ভৌত বৈশিষ্ট্য একটিই থাকে, যেমন লোহা ধাতব কঠিন ও চকচকে। কিন্তু যৌগে এর গঠনের মৌলগুলোর ভৌত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয়। যেমন— সোডিয়াম একটি ধাতু এবং ক্লোরিন একটি বিষাক্ত গ্যাস, কিন্তু এরা যুক্ত হয়ে লবণ (NaCl) তৈরি করলে তা খাদ্যোপযোগী পদার্থে রূপ নেয়।

সব মিলিয়ে বলা যায়, মৌলিক পদার্থ হলো পদার্থের মৌলিক একক আর যৌগিক পদার্থ হলো মৌলগুলোর মিলনে গঠিত জটিল রূপ। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও দৈনন্দিন জীবনে উভয়েরই অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। মৌল ছাড়া যৌগ গঠন সম্ভব নয় এবং যৌগ ছাড়া আমাদের জীবন সহজতর হতো না। তাই মৌল ও যৌগ উভয়ই আমাদের জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

পদার্থ সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ পদার্থ বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ যে বস্তুর ভর আছে এবং স্থান দখল করে তাকে পদার্থ বলে।

প্রশ্নঃ পদার্থের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তরঃ ভর ও আয়তন থাকা।

প্রশ্নঃ পদার্থ কয় প্রকার?
উত্তরঃ দুটি— মৌলিক পদার্থ ও যৌগিক পদার্থ।

প্রশ্নঃ মৌল কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পদার্থকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ভাঙা যায় না তাকে মৌল বলে।

প্রশ্নঃ যৌগ কাকে বলে?
উত্তরঃ দুটি বা ততোধিক মৌল নির্দিষ্ট অনুপাতে যুক্ত হলে যৌগ গঠিত হয়।

প্রশ্নঃ মিশ্রণ কী?
উত্তরঃ দুটি বা ততোধিক পদার্থ অনিয়মিত অনুপাতে যুক্ত হলে মিশ্রণ হয়।

প্রশ্নঃ মিশ্রণ ও যৌগের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তরঃ যৌগের অনুপাত নির্দিষ্ট, কিন্তু মিশ্রণের অনুপাত অনির্দিষ্ট।

প্রশ্নঃ পদার্থের তিনটি অবস্থা কী?
উত্তরঃ কঠিন, তরল ও গ্যাস।

প্রশ্নঃ কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তরঃ নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন থাকে।

প্রশ্নঃ তরল পদার্থের বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তরঃ নির্দিষ্ট আয়তন থাকে কিন্তু আকার পাত্র অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।

প্রশ্নঃ গ্যাসীয় পদার্থের বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তরঃ না আকার থাকে, না আয়তন; সর্বত্র ছড়িয়ে যায়।

প্রশ্নঃ পদার্থ কেন আণবিক গঠনবিশিষ্ট?
উত্তরঃ ক্ষুদ্র কণিকা (পরমাণু ও অণু) দিয়েই পদার্থ গঠিত।

প্রশ্নঃ পরমাণু কী?
উত্তরঃ মৌলের ক্ষুদ্রতম কণা যা রাসায়নিকভাবে অবিভাজ্য।

প্রশ্নঃ অণু কাকে বলে?
উত্তরঃ একই বা ভিন্ন পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত ক্ষুদ্রতম কণা যা স্বাধীনভাবে অস্তিত্ব রাখতে পারে।

প্রশ্নঃ পদার্থের ভর কী?
উত্তরঃ পদার্থে যত কণিকা থাকে তার পরিমাণকে ভর বলে।

প্রশ্নঃ পদার্থের আয়তন কী?
উত্তরঃ পদার্থ যে স্থান দখল করে তাকে আয়তন বলে।

প্রশ্নঃ ঘনত্ব কী?
উত্তরঃ একক আয়তনে ভরের পরিমাণ।

প্রশ্নঃ ভরবেগ কী?
উত্তরঃ ভর ও বেগের গুণফলকে ভরবেগ বলে।

প্রশ্নঃ জড়তা কী?
উত্তরঃ পদার্থের স্থির বা গতিশীল অবস্থায় থাকার প্রবণতাই জড়তা।

প্রশ্নঃ ভর ও ওজনের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তরঃ ভর ধ্রুব, কিন্তু ওজন মহাকর্ষের উপর নির্ভরশীল।

প্রশ্নঃ কঠিন পদার্থের কণিকা কীভাবে বিন্যস্ত থাকে?
উত্তরঃ কণিকাগুলো ঘনবদ্ধভাবে থাকে।

প্রশ্নঃ তরল পদার্থের কণিকা কীভাবে বিন্যস্ত থাকে?
উত্তরঃ কণিকা কিছুটা আলগা অবস্থায় থাকে।

প্রশ্নঃ গ্যাসীয় পদার্থের কণিকা কীভাবে থাকে?
উত্তরঃ কণিকা খুবই আলগা অবস্থায় মুক্তভাবে চলাচল করে।

প্রশ্নঃ পদার্থের তাপ প্রসারণ কী?
উত্তরঃ তাপ পেলে আয়তন বৃদ্ধি পাওয়াকে তাপ প্রসারণ বলে।

প্রশ্নঃ ধাতু গরম করলে আকার কেন বড় হয়?
উত্তরঃ তাপে কণিকার গতি বাড়ে, তাই ফাঁক বৃদ্ধি পায়।

প্রশ্নঃ তরলের ওপরিভাগ সমান কেন থাকে?
উত্তরঃ তরলের কণিকা স্বাধীনভাবে চলতে পারে বলে।

প্রশ্নঃ গ্যাস কেন যে কোনো পাত্র পূর্ণ করে ফেলে?
উত্তরঃ কণিকা সবদিকে দ্রুত গতিতে ছুটে চলে।

প্রশ্নঃ বায়ু কি পদার্থ?
উত্তরঃ হ্যাঁ, কারণ এর ভর ও আয়তন আছে।

প্রশ্নঃ পানি জমে বরফ হলে কী পরিবর্তন ঘটে?
উত্তরঃ পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন হয়— তরল থেকে কঠিনে।

প্রশ্নঃ পদার্থের অবস্থার পরিবর্তনের কারণ কী?
উত্তরঃ তাপশক্তির পরিবর্তন।

প্রশ্নঃ গলনাঙ্ক কী?
উত্তরঃ যে তাপমাত্রায় কঠিন তরলে রূপ নেয়।

প্রশ্নঃ স্ফুটনাঙ্ক কী?
উত্তরঃ যে তাপমাত্রায় তরল গ্যাসে রূপান্তরিত হয়।

প্রশ্নঃ চাপ কাকে বলে?
উত্তরঃ একক ক্ষেত্রফলের উপর বলকে চাপ বলে।

প্রশ্নঃ গ্যাস সংকুচিত করা যায় কেন?
উত্তরঃ কণিকার মধ্যে ফাঁকা স্থান বেশি থাকে বলে।

প্রশ্নঃ পানি সংকুচিত করা যায় না কেন?
উত্তরঃ কণিকার মধ্যে ফাঁকা স্থান খুব কম থাকে।

প্রশ্নঃ কঠিন পদার্থ চাপ প্রতিরোধী কেন?
উত্তরঃ কণিকা শক্তভাবে বাঁধা থাকে।

প্রশ্নঃ পদার্থের অবস্থা পরিবর্তনে শক্তি কোথায় যায়?
উত্তরঃ কণিকার মধ্যবর্তী বন্ধন ভাঙতে বা গড়তে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্নঃ বিশুদ্ধ পানি কি মৌল না যৌগ?
উত্তরঃ পানি একটি যৌগ (H₂O)।

প্রশ্নঃ লোহা কি মৌল না যৌগ?
উত্তরঃ লোহা একটি মৌল।

প্রশ্নঃ লবণ কোন ধরনের পদার্থ?
উত্তরঃ লবণ একটি যৌগ (NaCl)।

প্রশ্নঃ পদার্থ কেন দৃশ্যমান বা অদৃশ্য হতে পারে?
উত্তরঃ কণিকার ঘনত্ব ও আলোর প্রতিসরণের কারণে।

প্রশ্নঃ ধাতু সাধারণত কেমন বৈশিষ্ট্যযুক্ত পদার্থ?
উত্তরঃ দৃঢ়, চকচকে, তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী।

প্রশ্নঃ অধাতু পদার্থের বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তরঃ ভঙ্গুর, তাপ ও বিদ্যুৎ অপরিবাহী।

প্রশ্নঃ পদার্থের ভৌত ধর্ম কী?
উত্তরঃ রঙ, গন্ধ, আকার, অবস্থা ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ পদার্থের রাসায়নিক ধর্ম কী?
উত্তরঃ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণের ক্ষমতা।

প্রশ্নঃ পদার্থের সংরক্ষণ সূত্র কী বলে?
উত্তরঃ পদার্থ সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না, শুধু রূপ পরিবর্তন হয়।

প্রশ্নঃ বাষ্পীভবন কী?
উত্তরঃ তরল থেকে ধীরে ধীরে গ্যাসে রূপান্তর।

প্রশ্নঃ বাষ্পীভবনের হার কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে?
উত্তরঃ তাপমাত্রা, পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল ও বাতাস চলাচল।

প্রশ্নঃ আমরা কেন পদার্থকে অদৃশ্য শক্তির রূপে কল্পনা করি?
উত্তরঃ কারণ পদার্থ ও শক্তি একে অপরের রূপান্তরিত রাশি।

পদার্থ বিজ্ঞান ২য় অধ্যায় গতি সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ গতি বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ কোনো বস্তুর অবস্থান সময়ের সাথে পরিবর্তিত হলে তাকে গতি বলে।

প্রশ্নঃ গতি কত প্রকার?
উত্তরঃ গতি তিন প্রকার— সরলরেখীয়, বক্ররেখীয় ও ঘূর্ণন গতি।

প্রশ্নঃ গড় বেগ কাকে বলে?
উত্তরঃ মোট স্থানান্তরকে মোট সময় দিয়ে ভাগ করলে গড় বেগ পাওয়া যায়।

প্রশ্নঃ তাৎক্ষণিক বেগ কী?
উত্তরঃ খুব ক্ষুদ্র সময়ে বস্তুর বেগকে তাৎক্ষণিক বেগ বলে।

প্রশ্নঃ গড় দ্রুতি কী?
উত্তরঃ মোট অতিক্রান্ত দূরত্বকে মোট সময় দিয়ে ভাগ করলে গড় দ্রুতি পাওয়া যায়।

প্রশ্নঃ বেগ ও দ্রুতির মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তরঃ দ্রুতি একটি স্কেলার রাশি, আর বেগ ভেক্টর রাশি।

প্রশ্নঃ ধ্রুব গতি কাকে বলে?
উত্তরঃ বেগ ও দিক অপরিবর্তিত থাকলে সেই গতি ধ্রুব গতি।

প্রশ্নঃ অসমতর গতি কী?
উত্তরঃ সময়ের সাথে বেগ পরিবর্তিত হলে তাকে অসমতর গতি বলে।

প্রশ্নঃ ত্বরণ কী?
উত্তরঃ বেগের পরিবর্তন হারের সাথে সময় ভাগ করলে ত্বরণ পাওয়া যায়।

প্রশ্নঃ ঋণাত্মক ত্বরণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ যখন বস্তুর বেগ ক্রমশ হ্রাস পায়, তখন তাকে ঋণাত্মক ত্বরণ বলে।

প্রশ্নঃ যদি একটি গাড়ি ৫ সেকেন্ডে ১০ মি/সে বেগ থেকে ২০ মি/সে বেগে পৌঁছায়, তবে ত্বরণ কত?
উত্তরঃ a = (20–10)/5 = 2 মি/সে²।

প্রশ্নঃ গতি সমীকরণ কয়টি?
উত্তরঃ তিনটি— v = u + at, s = ut + ½at², v² = u² + 2as।

প্রশ্নঃ প্রথম গতি সমীকরণের প্রমাণ কীভাবে করা যায়?
উত্তরঃ ত্বরণের সংজ্ঞা থেকে a = (v–u)/t ⇒ v = u + at।

প্রশ্নঃ একটি পাথর ছেড়ে দিলে কেন মাটির দিকে পড়ে?
উত্তরঃ পৃথিবীর মহাকর্ষ বলের কারণে।

প্রশ্নঃ মুক্তপতন কী?
উত্তরঃ কেবল মহাকর্ষ বলের প্রভাবে বস্তুর পতনকে মুক্তপতন বলে।

প্রশ্নঃ মুক্তপতনে বস্তুর ত্বরণ কত?
উত্তরঃ পৃথিবীতে g = 9.8 মি/সে²।

প্রশ্নঃ যদি একটি বস্তুকে ঊর্ধ্বমুখে নিক্ষেপ করা হয়, কেন ধীরে ধীরে থেমে যায়?
উত্তরঃ মহাকর্ষ বল বেগের বিপরীতে কাজ করে বলে।

প্রশ্নঃ ২ সেকেন্ডে মুক্তপতনে একটি বস্তু কত দূরত্ব অতিক্রম করবে?
উত্তরঃ s = ½gt² = ½ × 9.8 × 4 = 19.6 মিটার।

প্রশ্নঃ প্রক্ষেপ গতি কী?
উত্তরঃ কোনো বস্তুকে কোণ করে নিক্ষেপ করলে তার গতি প্রক্ষেপ গতি।

প্রশ্নঃ প্রক্ষেপ গতিতে কতটি উপাদান থাকে?
উত্তরঃ দুটি— অনুভূমিক (x-অক্ষ বরাবর) ও উল্লম্ব (y-অক্ষ বরাবর)।

প্রশ্নঃ প্রক্ষেপ গতির পথরেখা কেমন হয়?
উত্তরঃ প্যারাবলাকার।

প্রশ্নঃ প্রক্ষেপণের সর্বোচ্চ উচ্চতার সূত্র কী?
উত্তরঃ H = (u²sin²θ)/(2g)।

প্রশ্নঃ প্রক্ষেপণের পাল্লার সূত্র কী?
উত্তরঃ R = (u²sin2θ)/g।

প্রশ্নঃ পাল্লা সর্বাধিক কবে হয়?
উত্তরঃ যখন θ = 45°।

প্রশ্নঃ যদি ২০ মি/সে বেগে ৩০° কোণে প্রক্ষেপ করা হয়, তবে পাল্লা কত?
উত্তরঃ R = (20² × sin60°)/9.8 ≈ 35.3 মি।

প্রশ্নঃ বৃত্তীয় গতি কী?
উত্তরঃ কোনো বস্তু বৃত্তাকার পথে চললে তাকে বৃত্তীয় গতি বলে।

প্রশ্নঃ বৃত্তীয় গতিতে অভিকেন্দ্র বল কী?
উত্তরঃ বস্তুটিকে বৃত্তপথে রাখতে যে বল কাজ করে।

প্রশ্নঃ অভিকেন্দ্র ত্বরণের সূত্র কী?
উত্তরঃ ac = v²/r।

প্রশ্নঃ পৃথিবী সূর্যের চারপাশে কেন পড়ে যায় না?
উত্তরঃ সূর্যের অভিকর্ষ বল অভিকেন্দ্র বল হিসেবে কাজ করে।

প্রশ্নঃ সড়কে বাঁক নিতে গেলে গাড়ি ধীরে কেন চালাতে হয়?
উত্তরঃ অভিকেন্দ্র বলের অভাব হলে গাড়ি ছিটকে যেতে পারে।

প্রশ্নঃ ক্রীড়াবিদ বাঁকা পথে দৌড়ালে শরীর কেন ঝুঁকিয়ে নেয়?
উত্তরঃ অভিকেন্দ্র বল সঠিকভাবে সামঞ্জস্য করার জন্য।

প্রশ্নঃ একক বৃত্তাকার গতি কী?
উত্তরঃ সমান সময়ে সমান কোণ অতিক্রম করলে একক বৃত্তাকার গতি।

প্রশ্নঃ কোণীয় বেগ কী?
উত্তরঃ একক সময়ে অতিক্রান্ত কোণ। ω = θ/t।

প্রশ্নঃ রৈখিক বেগ ও কোণীয় বেগের সম্পর্ক কী?
উত্তরঃ v = ωr।

প্রশ্নঃ যদি একটি ফ্যান প্রতি সেকেন্ডে ১০ রেডিয়ান ঘুরে, তবে কোণীয় বেগ কত?
উত্তরঃ ω = 10 রেড/সে।

প্রশ্নঃ দৈর্ঘ্য বেশি হলে লাটিম কেন বেশি সময় ধরে ঘোরে?
উত্তরঃ অভিকেন্দ্র বল সহজে সামঞ্জস্য হয় বলে।

প্রশ্নঃ পৃথিবী নিজের অক্ষে আবর্তিত হওয়ায় কী ঘটে?
উত্তরঃ দিন ও রাতের সৃষ্টি হয়।

প্রশ্নঃ গতি সমীকরণের ব্যবহার কোথায় হয়?
উত্তরঃ গাড়ি, রকেট, প্রক্ষেপণ, মুক্তপতন ইত্যাদির ক্ষেত্রে।

প্রশ্নঃ গতি বিশ্লেষণে গ্রাফ কেন ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ সম্পর্ক স্পষ্টভাবে বোঝাতে।

প্রশ্নঃ বেগ-সময় গ্রাফ থেকে কী নির্ণয় করা যায়?
উত্তরঃ স্থানান্তর।

প্রশ্নঃ ত্বরণ-সময় গ্রাফ থেকে কী পাওয়া যায়?
উত্তরঃ বেগের পরিবর্তন।

প্রশ্নঃ দ্রুতি-সময় গ্রাফ কেন সর্বদা ধনাত্মক?
উত্তরঃ দ্রুতি কখনো ঋণাত্মক হয় না।

প্রশ্নঃ সমবেগী গতি কী?
উত্তরঃ সমান সময়ে সমান স্থানান্তর হলে সমবেগী গতি।

প্রশ্নঃ প্রকৃতির কোন ক্ষেত্রে সমবেগী গতি দেখা যায়?
উত্তরঃ পৃথিবীর কক্ষপথে গ্রহের আবর্তনে।

প্রশ্নঃ ভেক্টর বিশ্লেষণ কেন গতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তরঃ স্থানান্তর ও বেগ ভেক্টর রাশি হওয়ায়।

প্রশ্নঃ ৫ সেকেন্ডে একটি গাড়ি ২৫ মি দূরত্ব অতিক্রম করল, তার গড় দ্রুতি কত?
উত্তরঃ v = s/t = 25/5 = 5 মি/সে।

প্রশ্নঃ পদার্থবিজ্ঞানে গতি অধ্যায় কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তরঃ মহাবিশ্বের প্রতিটি কণার গতির বিশ্লেষণে এর প্রযোজ্যতা রয়েছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url