full scren ads

কাবুলিওয়ালা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাবুলিওয়ালা গল্পটি বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সৃষ্টি। এই গল্পে এক আফগান ব্যবসায়ী রহমত ও ছোট্ট মেয়ে মিনির মধ্যে গড়ে ওঠা এক অনন্য মানবিক সম্পর্কের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। স্কুল, কলেজ ও বোর্ড পরীক্ষায় “কাবুলিওয়ালা” গল্প থেকে প্রায়ই সৃজনশীল প্রশ্ন আসে। তাই এই আর্টিকেলে গল্পটির গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর তুলে ধরা হয়েছে, যা পাঠকদের বোঝাপড়া আরও সহজ করবে।

কাবুলিওয়ালা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

কাবুলিওয়ালা গল্পের মূলভাব

এই গল্পে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেখিয়েছেন মানবিকতার শক্তি, পিতৃত্বের ভালোবাসা এবং আবেগের সার্বজনীনতা। দেশ, ধর্ম, ভাষা ভিন্ন হলেও ভালোবাসা ও সম্পর্ক সব বাধা পেরিয়ে মানুষকে একত্র করে। মানবতার গল্প, আবেগের গল্প, সম্পর্কের গল্প “কাবুলিওয়ালা” ঠিক এমনই এক গল্প, যেখানে সীমান্ত পেরিয়ে এক মানুষ এসে ছুঁয়ে যায় বাঙালির হৃদয়।

কাবুলিওয়ালা গল্পের mcq

কাবুলিওয়ালা গল্প pdf

কাবুলিওয়ালা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালা চরিত্রটি আমাদের সমাজের কোন দিকটি তুলে ধরে?
উত্তরঃ সে মানবিক সম্পর্কের বিশুদ্ধতা ও আন্তরিকতার প্রতীক, যা জাতি ও ভাষার সীমা পেরিয়ে যায়।

প্রশ্নঃ গল্পে কাবুলিওয়ালা কেন ছোট্ট মেয়েটির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল?
উত্তরঃ মিনির মধ্যে সে নিজের কন্যার প্রতিচ্ছবি দেখতে পেত, যা তার পিতৃস্নেহ জাগিয়ে তোলে।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালা গল্পে রবীন্দ্রনাথ কীভাবে মানবতাবাদ প্রকাশ করেছেন?
উত্তরঃ লেখক দেখিয়েছেন, মানুষে মানুষে সম্পর্ক ভালোবাসা ও অনুভূতির মাধ্যমে গড়ে ওঠে, জাতি বা ধর্মে নয়।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার পেশা গল্পের মূল থিমের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কিত?
উত্তরঃ পেশা তার জীবনের প্রয়োজনে হলেও, সে পেশার আড়ালে এক মমতাময় পিতা ও মানুষ হিসেবে ফুটে ওঠে।

প্রশ্নঃ “কাবুলিওয়ালা” গল্পে মিনির চরিত্র কেমনভাবে উপস্থাপিত হয়েছে?
উত্তরঃ মিনিকে শিশু-নির্মলতা, সরলতা ও ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার কারাবাস তার জীবনে কী পরিবর্তন আনে?
উত্তরঃ সে সময় ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়; মিনির শৈশব হারিয়ে যায়, এবং সে বুঝতে পারে সময় কারও জন্য থেমে থাকে না।

প্রশ্নঃ গল্পে পিতা-মেয়ের সম্পর্ক কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তরঃ লেখক দুই পিতার (মিনির পিতা ও কাবুলিওয়ালা) মাধ্যমে পিতৃত্বের মমতা গভীরভাবে প্রকাশ করেছেন।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালা কি শুধুই এক ব্যবসায়ী?
উত্তরঃ না, সে এক সংবেদনশীল মানুষ, যে আবেগ ও ভালোবাসার গভীর অনুভবে ভরপুর।

প্রশ্নঃ গল্পে রবীন্দ্রনাথ কেন কাবুলিওয়ালাকে আফগান চরিত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন?
উত্তরঃ বিদেশি চরিত্রের মাধ্যমে তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন মানবতার সার্বজনীনতা ভালোবাসা ভাষা বা সংস্কৃতির বাধা মানে না।

প্রশ্নঃ “কাবুলিওয়ালা” গল্পে সমাজের কোন বৈষম্যটি প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তরঃ সমাজে বিদেশি বা গরিব মানুষের প্রতি অবিশ্বাস ও দূরত্বের মনোভাব স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার কন্যার স্মৃতি তার জীবনে কী প্রভাব ফেলেছিল?
উত্তরঃ সে প্রতিদিন সেই স্মৃতিতে বাঁচতো; মিনিকে দেখলেই তার কন্যার মুখ মনে পড়তো।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার জেল থেকে মুক্তির দৃশ্যটি কেন আবেগময়?
উত্তরঃ কারণ মুক্তির পর সে দেখে, যার জন্য সে বেঁচে ছিল সেই মেয়ে এখন আর শিশুটি নয়।

প্রশ্নঃ গল্পে সময়ের প্রভাব কেমনভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তরঃ সময় মানুষের সম্পর্ক, বয়স ও অনুভূতিকে বদলে দেয় — যেমন মিনি বড় হয়ে যায়, কিন্তু কাবুলিওয়ালা একই থেকে যায়।

প্রশ্নঃ গল্পে পিতার মনস্তত্ত্ব কেমনভাবে প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তরঃ পিতা হিসেবে মিনির প্রতি যত্ন, ভয় ও স্নেহের মিশ্র আবেগ প্রকাশিত হয়েছে।

প্রশ্নঃ “রাহমত” নামটি কি প্রতীকী অর্থ বহন করে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, নামটি “করুণা” বা “দয়া”-এর অর্থে ব্যবহৃত, যা তার মানবিক চরিত্রকে প্রতিফলিত করে।

প্রশ্নঃ মিনি ও কাবুলিওয়ালার সম্পর্ক কীভাবে গড়ে উঠেছিল?
উত্তরঃ নিঃস্বার্থ হাসি-ঠাট্টা ও মমতার বন্ধনে তাদের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার গল্পে হাস্যরসের ভূমিকা কী?
উত্তরঃ গল্পের শুরুতে মিনির কথাবার্তা ও কাবুলিওয়ালার প্রতিক্রিয়া একধরনের শিশুসুলভ হাস্যরস সৃষ্টি করে।

প্রশ্নঃ মিনি যখন বিয়ে করে, তখন কাবুলিওয়ালা কেন কেঁদে ফেলেছিল?
উত্তরঃ সে বুঝেছিল, তার নিজের মেয়েও হয়তো এমন বড় হয়ে গেছে, কিন্তু সে পাশে নেই।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার হাতে শুকনো কিসমিস ও বাদাম কেন প্রতীকী?
উত্তরঃ এগুলো তার পেশার সঙ্গে যুক্ত হলেও, ভালোবাসা ও স্মৃতির প্রতীক হিসেবে গল্পে গুরুত্ব পেয়েছে।

প্রশ্নঃ “কাবুলিওয়ালা” গল্পটি আমাদের কী শিক্ষা দেয়?
উত্তরঃ ভালোবাসা, মানবতা ও সময়ের মূল্য সম্পর্কে গভীর শিক্ষা দেয়।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালা গল্পে কলকাতার সমাজচিত্র কেমন ছিল?
উত্তরঃ মধ্যবিত্ত, ধর্মান্ধ ও সামাজিক ভেদাভেদের একটি বাস্তব চিত্র দেখা যায়।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার চরিত্রে কোন গুণটি সবচেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে?
উত্তরঃ পিতৃত্বের মমতা ও মানবিকতা।

প্রশ্নঃ রবীন্দ্রনাথ এই গল্পে কোন সাহিত্যিক রীতি ব্যবহার করেছেন?
উত্তরঃ বাস্তবধর্মী বর্ণনা ও সংবেদনশীল আবেগময়তা।

প্রশ্নঃ গল্পে ‘বিদেশি’ চরিত্রের উপস্থিতি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তরঃ এটি দেখায় ভালোবাসা ও মানবতা কোনো দেশের সীমানায় আটকে থাকে না।

প্রশ্নঃ মিনির পিতা কাবুলিওয়ালাকে কেন ভয় পেতেন?
উত্তরঃ তিনি ভাবতেন, সে হয়তো ক্ষতিকর বা অচেনা মানুষ, যা সমাজের প্রচলিত ভয়ের প্রতিফলন।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার গল্পে মাতৃত্ব কোথায় প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তরঃ মিনির মা’র মেয়েকে রক্ষা করার প্রবল ইচ্ছায় মাতৃত্ব ফুটে উঠেছে।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালা জেলে যাওয়ার আগে কী ঘটেছিল?
উত্তরঃ এক ঋণগ্রহীতার সঙ্গে সংঘর্ষে সে ক্রোধে তাকে আঘাত করে, ফলে কারাদণ্ড হয়।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার জীবন কি ট্র্যাজেডি?
উত্তরঃ হ্যাঁ, কারণ সে নিজের ভালোবাসার মানুষদের থেকে চিরবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালা কেন মিনির বিয়ের দিনে এলেন?
উত্তরঃ সে তার প্রিয় শিশুটিকে একবার দেখতে ও তার ভালো থাকা নিশ্চিত করতে চেয়েছিল।

প্রশ্নঃ লেখক গল্পের শেষে কাবুলিওয়ালাকে কী বার্তা দিয়েছেন?
উত্তরঃ জীবনের বাস্তবতা মেনে নিতে শেখা ও ভালোবাসার ত্যাগ স্বীকার করা।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার চরিত্রে কৌতূহল কেমনভাবে প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তরঃ মিনির কথাবার্তায় সে মজা পেত; তার প্রশ্নে অবাক হলেও হাসিমুখে উত্তর দিত — এখানেই কৌতূহল দেখা যায়।

প্রশ্নঃ মিনি ও কাবুলিওয়ালার বন্ধুত্ব সমাজে কী বার্তা দেয়?
উত্তরঃ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ভালোবাসা ও সম্পর্ক মানবতার সেতুবন্ধন তৈরি করে।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার পোশাক ও ব্যবহার কী বোঝায়?
উত্তরঃ তার পোশাক বিদেশি হলেও, ব্যবহার ছিল আন্তরিক ও মানবিক, যা বাহ্যিকতা নয়, অন্তরের পরিচয় প্রকাশ করে।

প্রশ্নঃ লেখক গল্পে কোন দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করেছেন?
উত্তরঃ গল্পটি মিনির পিতার দৃষ্টিকোণ থেকে বলা হয়েছে, যা আবেগ ও বাস্তবতার মিশেল।

প্রশ্নঃ “বাবু” চরিত্রের মানসিক পরিবর্তন কখন ঘটে?
উত্তরঃ যখন তিনি বুঝতে পারেন, কাবুলিওয়ালাও তার মতো এক পিতা — তখন তার মনে সহানুভূতি জাগে।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার ‘চিরকুট’ কেন গল্পের প্রতীক?
উত্তরঃ সেই চিরকুটে কন্যার হাতের ছাপ পিতৃস্নেহ ও স্মৃতির অমর প্রতীক।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার চরিত্রে সাহস কেমনভাবে প্রকাশিত?
উত্তরঃ বিদেশে একা থেকে কাজ করা, শাস্তি মেনে নেওয়া ও সত্যিকার আবেগ প্রকাশ করা — এগুলো তার সাহসের পরিচয়।

প্রশ্নঃ গল্পে শিশুমন কীভাবে দেখানো হয়েছে?
উত্তরঃ মিনির সরলতা, জিজ্ঞাসা ও নির্ভীক আচরণ শিশুমনের নিস্পাপ প্রতিচ্ছবি।

প্রশ্নঃ সমাজ কাবুলিওয়ালাকে কীভাবে দেখেছিল?
উত্তরঃ সমাজ তাকে বিদেশি ও সন্দেহজনক মনে করত, যা মানবিক অজ্ঞতার প্রতিফলন।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালা গল্পে মানবতার চূড়ান্ত রূপ কোথায় দেখা যায়?
উত্তরঃ মিনির পিতা যখন নিজের আনন্দের দিনে কাবুলিওয়ালাকে সাহায্য করেন — তখন মানবতার শ্রেষ্ঠ রূপ প্রকাশ পায়।

প্রশ্নঃ রবীন্দ্রনাথ এই গল্পে কোন জীবনদর্শন প্রকাশ করেছেন?
উত্তরঃ জীবনে অর্থের চেয়ে অনুভূতি ও ভালোবাসাই সত্যিকার মূল্যবান।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার হাসি কেন মিশ্র অনুভূতি জাগায়?
উত্তরঃ সেই হাসিতে আছে আনন্দ, আবার লুকিয়ে আছে দীর্ঘ বিচ্ছেদের বেদনা।

প্রশ্নঃ লেখকের ভাষাশৈলী কেমন ছিল?
উত্তরঃ সহজ, আবেগপূর্ণ ও কাব্যিক — যা গল্পকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে।

প্রশ্নঃ গল্পে প্রতীকীতা কোথায় ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তরঃ কিসমিস, বাদাম ও চিরকুট গল্পে ভালোবাসা, স্মৃতি ও সম্পর্কের প্রতীক।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালার ট্র্যাজেডি কোন জায়গায় গভীরভাবে প্রকাশিত?
উত্তরঃ যখন সে দেখে মিনি বড় হয়ে গেছে, তখন তার জীবনের একাকীত্ব ও হারানো সময়ের যন্ত্রণা ফুটে ওঠে।

প্রশ্নঃ গল্পে মিনির বিবাহদৃশ্যের তাৎপর্য কী?
উত্তরঃ এটি সময়ের পরিবর্তন, শৈশবের অবসান ও জীবনের নতুন অধ্যায়ের প্রতীক।

প্রশ্নঃ কাবুলিওয়ালা গল্পের মূল বার্তা কী?
উত্তরঃ ভালোবাসা ও মানবতা সকল জাতি-ধর্মের ঊর্ধ্বে — সেটিই গল্পের মূল বার্তা।

প্রশ্নঃ “মানুষের মধ্যে মানুষ” — এই ধারণা কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তরঃ কাবুলিওয়ালার চরিত্র প্রমাণ করে, মানুষের পরিচয় তার হৃদয় ও মমতায়।

প্রশ্নঃ লেখকের দৃষ্টিতে কাবুলিওয়ালা কি অপরাধী?
উত্তরঃ আইনের চোখে অপরাধী হলেও, নৈতিকভাবে সে এক মানবিক ও দয়ালু পিতা।

প্রশ্নঃ গল্পটি আজও কেন পাঠকদের হৃদয়ে অমলিন?
উত্তরঃ কারণ এতে মানবতার অনন্ত সত্য, ভালোবাসা ও সম্পর্কের গভীর আবেগ চিরন্তনভাবে ফুটে উঠেছে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url