বিলাসী গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর | সাধারণ জ্ঞান MCQ
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যের রচনা বিলাসী বাংলা সাহিত্যের এক শক্তিশালী সামাজিক উপাখ্যান। ১৯১৮ সালের এই গল্পে লেখক আধুনিক সমাজের ভোগবিলাসী মনোভাব, পারিবারিক সংসারের জটিলতা ও মানসিক একাকীত্বকে সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ও সহানুভূতিশীল ব্যাখ্যার মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বিলাসীর বাহ্যিক সমৃদ্ধি থাকা সত্ত্বেও অন্তর্নিহিত এক অসহায়তা ও শূন্যতা দেখা যায়, যা পাঠককে বোঝায় সত্যিকারের সুখ কেবল ভৌত সম্বল থেকে আসে না, বরং আন্তরিক সম্পর্ক ও আত্মিক শান্তি বহু বেশি মূল্যবান। এসব দিক থেকেই বিলাসী এখনও শিক্ষার্থীদের ও সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং চিন্তা উদ্রেককারী।
বিলাসী গল্পের লেখক কে
বিলাসী গল্পের রচয়িতা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, যিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান সাহিত্যিক। তার লেখায় সাধারণ মানুষের জীবনের দুঃখ-কষ্ট, সামাজিক বৈষম্য এবং নৈতিক শিক্ষা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। “বিলাসী” গল্পেও তিনি গ্রামের সামাজিক বাস্তবতা, ন্যায্যতা এবং মানবিক দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়েছেন। শরৎচন্দ্রের গল্পগুলো সাধারণত মানব চরিত্রের গভীর বিশ্লেষণ এবং নৈতিকতা প্রদর্শনে সমৃদ্ধ।
বিলাসী গল্পের কথক কে
গল্পের কথক হল তৃতীয় পুরুষে বর্ণিত। অর্থাৎ গল্পটি তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপিত। কথক সরাসরি চরিত্রের মনোবৃত্তি এবং সামাজিক পরিস্থিতি বর্ণনা করেন। তিনি পাঠককে গ্রামের জীবন, সামাজিক বাধা এবং চরিত্রগুলোর অন্তর্দৃষ্টি বোঝাতে সহায়ক।
বিলাসী গল্পের বর্ণনাকারী কে
বর্ণনাকারী মূলত সর্বদর্শী তৃতীয় পুরুষ। বর্ণনাকারীর মাধ্যমে গল্পে চরিত্রগুলোর কার্যকলাপ, সমাজে সংঘটিত বৈষম্য এবং নৈতিক বার্তা সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বিলাসী গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র কোনটি
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন বিলাসী, যিনি সাহস, মানবিক দায়িত্ব এবং ন্যায়পরায়ণতার প্রতীক। তার চরিত্রের মাধ্যমে গল্পের মূল নৈতিক বার্তা ফুটে উঠেছে।
বিলাসী গল্পে মৃত্যুঞ্জয় কোন বংশের
মৃত্যুঞ্জয় গল্পে মিত্রবংশের ছেলে হিসেবে বর্ণিত। তিনি সমাজের নিম্নবর্ণের হলেও উদার ও সহমর্যাদাপূর্ণ। তার চরিত্র সামাজিক অবিচার ও বৈষম্যকে তুলে ধরে।
বিলাসী গল্পের খুড়া কোন বংশের
গল্পের খুড়া ছিল সাপুড় বংশের, যিনি সামাজিকভাবে নীচ ও হীন অবস্থানে ছিলেন এবং গল্পের সামাজিক সমস্যার প্রতীক।
বিলাসী গল্পে বিলাসী কিসের প্রতীক
বিলাসী চরিত্র সাহস, ন্যায়পরায়ণতা এবং মানবিক দায়িত্ববোধের প্রতীক। তার মাধ্যমে পাঠক সমাজে ন্যায্যতা, উদারতা এবং সামাজিক দায়িত্বের গুরুত্ব বোঝে।
বিলাসী গল্পের বিখ্যাত উক্তি
গল্পের বিখ্যাত উক্তি হলো মানুষের মূল্য তার ধন দ্বারা নয়, তার সাহস ও ন্যায়পরায়ণতায় নির্ধারিত। এটি গল্পের মূল শিক্ষামূলক বার্তা প্রতিফলিত করে
বিলাসী গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
উত্তরঃ ১৩২৫ বঙ্গাব্দে (১৯১৮ খ্রিস্টাব্দ) ‘ভারতী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
প্রশ্নঃ গল্পের লেখক কে?
উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্নঃ গল্পের ভাষ্যকার (বর্ণনাকারী) কে?
উত্তরঃ ন্যাড়া তাঁর নিজস্ব ভাষ্যে গল্পটি বলেছে।
প্রশ্নঃ ‘বিলাসী’ নামে কোন চরিত্র রয়েছে?
উত্তরঃ হ্যাঁ — গল্পের নারী প্রধান চরিত্রের নাম বিলাসী।
প্রশ্নঃ গল্পে ‘মৃত্যুঞ্জয়’ কে?
উত্তরঃ মৃত্যুঞ্জয় এক উচ্চবর্গীয় ব্যক্তি, যিনি পরে সাপুড়ে (সাপ শৌখিন) জীবন গ্রহণ করেন।
প্রশ্নঃ বিলাসী ও মৃত্যুঞ্জয়ের মিল কী ছিল?
উত্তরঃ তারা দু’জনেই সামাজিক রীতিনীতি ও পুরনো ধ্যান-ধারণার বিপরীতে গিয়ে ভালোবাসার পথে হেঁটেছে।
প্রশ্নঃ গল্পের প্রধান সামাজিক বিষয়বস্তু কী?
উত্তরঃ জাতবৈষম্য, রক্ষণশীল সমাজ, ভালোবাসা ও সে বিকল্প জীবনচিন্তার বিষয়বস্তু
প্রশ্নঃ গল্পের মূলভাব কী?
উত্তরঃ আধুনিক বাঙালি সমাজে যুগোপযোগী পরিবর্তন ও শিক্ষার অভাব বাস্তবভাবে ফুটে উঠেছে।
প্রশ্নঃ ‘অন্নপাপ’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ অন্যের দ্বারা ভোগ করা খাদ্য/থিতু যা সামাজিক দৃষ্টিতে অপবিত্র বা বিতর্কিত হিসেবে ধরা হয় — গল্পে এটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।
প্রশ্নঃ গল্পে কেন সমাজ বিলাসী ও মৃত্যুঞ্জয়ের সম্মিলন মেনে নিতে পারেনি?
উত্তরঃ কারণ সামাজিক মর্যাদা, জাতি ও শ্রেণি ভেদ বিশিষ্ট এক প্রেক্ষিতে তারা ভালোবাসার পথে গিয়েছিল যা সমাজের প্রচলিত নিয়মবিরুদ্ধ ছিল।
প্রশ্নঃ ‘টিকিয়া থাকা’ কি ধারণা গল্পে এসেছে?
উত্তরঃ হ্যাঁ — লেখকের কাছে শুধু ‘সার্থকতা’ নয়, ‘টিকিয়া থাকা’ অর্থ সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া/টেকতে পারাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রশ্নঃ বিলাসীর মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল?
উত্তরঃ সে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছিল।
প্রশ্নঃ মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল?
উত্তরঃ সে সাপের কামড়ে মারা যায় (সাপুড়ে জীবন গ্রহণের পর)।
প্রশ্নঃ গল্পে “চার ক্রোশ পথ” কেন উল্লেখ আছে?
উত্তরঃ স্কুলে যাওয়া-আসার জন্য গ্রামের ছেলেমেয়েরা দীর্ঘ পথ হেঁটে যেত, যা শিক্ষার দুরবস্থা ও সামাজিক অবস্থা নির্দেশ করে।
প্রশ্নঃ মালো শব্দটি গল্পে কি অর্থে এসেছে?
উত্তরঃ সাপের ওঝা বা সাপ ধরা-চালিয়ে যাওয়া ব্যক্তি অর্থে।
প্রশ্নঃ বিলাসীর স্বভাব বা গুণ-দোষ কী ছিল?
উত্তরঃ সে কর্মনিপুণ, বুদ্ধিমতী ও সেবাব্রতী ছিল, কিন্তু সামাজিক বন্ধন ও মানসিক শান্তিতে অভাব ছিল।
প্রশ্নঃ গল্পে “রক্ষণশীলতা ও অনুদারতা” কোন দিক থেকে দেখানো হয়েছে?
উত্তরঃ সমাজের ঐতিহ্যবাহী নিয়মবিধি, শ্রেণি-জাতিভিত্তিক আচরণ ও বৈষম্যের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে।
প্রশ্নঃ গল্পের পরিবেশ কী ধরণের?
উত্তরঃ গ্রামীণ-পল্লীসহ আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট নয়, এক সনাতন হিন্দু সমাজের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ।
প্রশ্নঃ গল্পে ভালোবাসার অর্থ কিভাবে ব্যাখ্যা হয়েছে?
উত্তরঃ ভালোবাসা মাত্র ভোগ বা সামাজিক মর্যাদা নয়, বরং আত্ম-দান, সমানচোখে দেখার অনুভূতি ছিল।
প্রশ্নঃ গল্পে সামাজিক বিচ্যুতি বা অসঙ্গতি কোন দৃষ্টিতে এসেছে?
উত্তরঃ উচ্চবর্ণের মানুষ নিম্নবর্ণের সাপুড়ে মেয়েকে গ্রহণ করলেও সমাজ তা মেনে নিতে পারেনি — এই অসঙ্গতির চিত্র আছে।
প্রশ্নঃ বিংশ শতাব্দীর দিকে এই গল্পটির প্রাসঙ্গিকতা কী?
উত্তরঃ আজ-ও সামাজিক বৈষম্য, শিক্ষার অনুপযোগিতা ও পরিবর্তনের অভাব বিষয়গুলো প্রাসঙ্গিক।
প্রশ্নঃ গল্পটি লালন-পালনের দৃষ্টিতে কী বার্তা দেয়?
উত্তরঃ বাহ্যিক সফলতা বা ধন-সম্পদ নয়, মানবিক মূল্যবোধ ও একে-অপরের প্রতি দায়বদ্ধতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্নঃ গল্পে নারী চরিত্রের অবস্থান কী ধরণের?
উত্তরঃ নারী চরিত্র বিলাসী তার নিজের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, ভালোবাসা করছে — তবে সামাজিক বন্ধনে আটকে পড়েছে।
প্রশ্নঃ ছেলে বা পুরুষদের দৃষ্টিকোণ থেকে গল্পে কী প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তরঃ নারীর স্বাধীনতা, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ও সামাজিক অনুমানের বন্ধন নিয়ে চিন্তা দিয়েছে।
প্রশ্নঃ গল্পে “সাপুড়ে হওয়া” প্রতীক হিসেবে কী বোঝায়?
উত্তরঃ সামাজিক মর্যাদা ত্যাগ করে সৎ ও মানব-প্রেমভিত্তিক জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রতীক।
প্রশ্নঃ গল্পে শিক্ষার অবস্থা কী?
উত্তরঃ গ্রামের ছেলে-মেয়েরা অনেক দূর যেতে হতো, শিক্ষার সুযোগ সীমিত ছিল — শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ গল্পে অভিযোগ বা দোষারোপ কোথায়?
উত্তরঃ সমাজের কুসংস্কার, শ্রেণি বিভাজন ও অন্যায় সামাজিক আচরণের বিরুদ্ধে।
প্রশ্নঃ গল্পে “মানুষ vs সমাজ” কোন রূপে আসে?
উত্তরঃ ব্যক্তিগত ভালোবাসা ও মানবিকতা সমাজের প্রচলিত নিয়মবিধির মুখোমুখি দাঁড়ায়।
প্রশ্নঃ গল্পের ভাষা-শৈলী কেমন?
উত্তরঃ সরল, প্রাঞ্জল ও ভাববহুল — গল্প বলার ধাঁচ মানব-চিন্তার প্রতি সহানুভূতিপূর্ণ।
প্রশ্নঃ গল্পটি কারা পড়া উচিৎ বলে আপনি মনে করেন?
উত্তরঃ যারা সামাজিক পরিবর্তন, নারী স্বাধীনতা ও বাংলা গল্প-সাহিত্য নিয়ে ভাবতে চান।
প্রশ্নঃ গল্পটি কী ধরনের মনস্তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট দেয়?
উত্তরঃ চরিত্রদের মনস্তত্ত্ব — ভালোবাসার প্রতিফলন, সামাজিক ব্যাথা ও মানসিক একাকীত্ব — উঠে আসে।
প্রশ্নঃ গল্পে ‘আত্মহত্যা’ অংশটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তরঃ বিলাসীর আত্মহত্যা সমাজ-বিধির চাপ ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার শেষ প্রতিফলন।
প্রশ্নঃ গল্পের শিরোনাম কেন “বিলাসী”?
উত্তরঃ গল্পের নারী চরিত্রের নাম হওয়ায়, একই সঙ্গে “বিলাসিতা” ও “বিলাসীর জীবনের করুণতা” উভয়কেই নির্দেশ করে।
প্রশ্নঃ গল্পে সামাজিক সংস্কার-বদ্ধ মনোভাব কীভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে?
উত্তর:** গ্রামের মানুষ নতুন ধ্যান-ধারণা মেনে নিতে চায়নি, উচ্চবর্ণ-নিম্নবর্ণ বিভাজন রয়ে গেছে।
প্রশ্নঃ “ভোগবিলাস” ও “আত্মিক শান্তি”-র মধ্যে পার্থক্য গল্পে কীভাবে দেখানো হয়েছে?
উত্তরঃ বাহ্যিক ভোগবিলাস থাকলেও আত্মিক শান্তির অভাবে চরিত্ররা দুঃখে ভুগেছে।
প্রশ্নঃ গল্পে কোথায় বিরোধ বা সংঘাত দেখা দেয়?
উত্তরঃ চরিত্র ও সামাজিক রীতির মধ্যে, ভালোবাসা ও সামাজিক অনুমানের মধ্যে।
প্রশ্নঃ গল্পে প্রত্যেক চরিত্রেই কি শিক্ষা রয়েছে?
উত্তরঃ হ্যাঁ — চরিত্র-চিত্রণ মাধ্যমে সামাজিক শিক্ষা পাওয়া যায়।
প্রশ্নঃ গল্পটি আজকের সময়েও প্রাসঙ্গিক কেন?
উত্তরঃ কারণ আজও সামাজিক বৈষম্য, নারী স্বাধীনতার প্রশ্ন ও শিক্ষার সুযোগ-অসুবিধা আছে।
প্রশ্নঃ আপনি কি মনে করেন গল্পে সঙ্গতি আছে?
উত্তরঃ হ্যাঁ — শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোবাসা, সমাজ ও মানুষের সংগ্রামের ধারা সঙ্গত।
প্রশ্নঃ গল্পটি পড়ার পর পাঠক কী ভাবতে পারে?
উত্তরঃ সমাজ-নিয়মের অন্তরায়, মানুষের স্বাধীনতা ও সহৃদয়তার গুরুত্ব নিয়ে চিন্তা।
প্রশ্নঃ গল্পটি কি শুধুই দুঃখ-কর?
উত্তরঃ না — যদিও করুণ পরিণতি আছে, তবে ভালোবাসা, মানবিকতা ও সাহসের উৎসাহও রয়েছে।
প্রশ্নঃ গল্পে ‘বিলাসী’ চরিত্রের পরিবর্তন ঘটেছে কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ — জীবনের সহচর, সামাজিক মর্যাদা ও মানসিক অবস্থার পরিবর্তন দেখা যায়।
প্রশ্নঃ গল্পে “স্বিনী” বা নিজস্বতা নিয়ে কোনো কথা এসেছে?
উত্তরঃ চরিত্রেরা নিজেদের পথ খুঁজেছে — বিশেষ করে বিলাসী ও মৃত্যুঞ্জয় — সামাজিক সীমানার বাইরে।
প্রশ্নঃ এই গল্প থেকে কি সামাজিক দায়বদ্ধতার পাঠ পাওয়া যায়?
উত্তরঃ হ্যাঁ — মানুষ একে-অপরের প্রতি দায়বদ্ধ, শুধু নিজস্ব স্বার্থ নয়।
প্রশ্নঃ আপনার মতে, গল্পটি শেষ ভালো হয়েছে কি না? সমর্থন কর।
উত্তরঃ এটি সবচেয়ে বাস্তবসম্মত — সুখী শেষ না হলেও তা বাস্তবের সাথে मेल খায় এবং চিন্তা উদ্দীপক।
প্রশ্নঃ “বিলাসী” গল্পের মূল ভাব বা মূল বক্তব্য কী?
উত্তরঃ গল্পের মূল ভাব হলো— ধনসম্পদ, বিলাসিতা ও বাহ্যিক সুখে মানুষের প্রকৃত শান্তি নেই; সত্যিকারের সুখ নিহিত ভালোবাসা, ত্যাগ ও আত্মিক সন্তুষ্টিতে।
প্রশ্নঃ গল্পের প্রধান চরিত্র বিলাসী কেমন নারী ছিলেন?
উত্তরঃ বিলাসী ছিলেন ধনী পরিবারের শিক্ষিতা ও সৌন্দর্যমণ্ডিত নারী, যিনি জীবনের বিলাসিতার মাঝেও অন্তরে গভীর শূন্যতা ও একাকীত্ব অনুভব করতেন।
প্রশ্নঃ লেখক কেন গল্পের নাম রেখেছেন “বিলাসী”?
উত্তরঃ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম বিলাসী এবং তাঁর জীবন ছিল বিলাসিতায় পূর্ণ, কিন্তু সেই বিলাসিতা তাঁকে সুখ দিতে পারেনি—এই বৈপরীত্যের মধ্যেই নামের তাৎপর্য নিহিত।
প্রশ্নঃ বিলাসীর জীবনে কী অভাব ছিল?
উত্তরঃ বিলাসীর জীবনে ভালোবাসা, মানসিক শান্তি ও পারিবারিক সম্পর্কের উষ্ণতার অভাব ছিল, যা তাঁর জীবনকে অর্থহীন করে তুলেছিল।
প্রশ্নঃ লেখক গল্পে সমাজের কোন দিকটি তুলে ধরেছেন?
উত্তরঃ লেখক ধনী ও ভোগবিলাসী সমাজের ভেতরকার শূন্যতা, কৃত্রিমতা এবং মানবিক সম্পর্কের অবক্ষয়কে তুলে ধরেছেন।
প্রশ্নঃ গল্পে বিলাসী চরিত্রের মাধ্যমে লেখক কী শিক্ষা দিতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ লেখক শিখিয়েছেন যে অর্থ ও বিলাসিতা মানুষের জীবনের সুখের নিশ্চয়তা নয়; ভালোবাসা ও মানবিক সম্পর্কই প্রকৃত সুখের উৎস।
প্রশ্নঃ বিলাসীর জীবনকে কেন ট্র্যাজিক বলা হয়?
উত্তরঃ কারণ, তিনি সবকিছু পেয়েও মানসিক শান্তি পাননি; ভালোবাসার অভাবে তাঁর জীবন এক নিঃসঙ্গ ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে।
প্রশ্নঃ “বিলাসী” গল্পে লেখকের মানবপ্রেমের প্রকাশ কিভাবে ঘটেছে?
উত্তরঃ লেখক সহানুভূতির দৃষ্টিতে বিলাসীর জীবনের দুঃখ দেখিয়েছেন এবং সমাজের ভোগবাদী মানসিকতার বিরুদ্ধে মানবিকতার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রশ্নঃ গল্পে বাস্তবতা ও অনুভূতির মেলবন্ধন কীভাবে ঘটেছে?
উত্তরঃ লেখক জীবনের বাস্তব চিত্র যেমন ধনসম্পদ, সামাজিক রীতি, পারিবারিক দূরত্ব দেখিয়েছেন; পাশাপাশি চরিত্রগুলোর গভীর মানসিক অনুভূতিও ফুটিয়ে তুলেছেন।
প্রশ্নঃ বিলাসী চরিত্রের মানসিক দ্বন্দ্ব কী ছিল?
উত্তরঃ একদিকে তিনি বাহ্যিক সুখ ও বিলাসিতা উপভোগ করেন, অন্যদিকে অন্তরে তীব্র নিঃসঙ্গতা ও ভালোবাসার অভাবে ভুগেন—এই দ্বন্দ্বই তাঁর মানসিক টানাপোড়েন।
প্রশ্নঃ গল্পের পরিবেশ বা পটভূমি কেমন?
উত্তরঃ গল্পটি শহুরে শিক্ষিত সমাজের পটভূমিতে রচিত, যেখানে বিলাসিতা ও মানসিক শূন্যতা পাশাপাশি চলেছে।
প্রশ্নঃ গল্পে নারীজীবনের কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে?
উত্তরঃ এখানে শিক্ষিতা নারীর সমাজে অবস্থান, মানসিক চাহিদা ও ভালোবাসাহীন জীবনের যন্ত্রণা ফুটে উঠেছে।
প্রশ্নঃ “বিলাসী” গল্পে মানবজীবনের কোন সত্য প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তরঃ ধন-সম্পদে নয়, আত্মিক তৃপ্তি ও ভালোবাসাতেই জীবনের প্রকৃত সুখ নিহিত—এই সত্য প্রকাশ পেয়েছে।
প্রশ্নঃ লেখকের ভাষাশৈলী কেমন?
উত্তরঃ শরৎচন্দ্রের ভাষা সহজ, প্রাঞ্জল ও হৃদয়স্পর্শী। তিনি সাধারণ শব্দে গভীর অনুভূতি প্রকাশে পারদর্শী।
প্রশ্নঃ গল্পে প্রতীকী দিকটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তরঃ ‘বিলাসী’ নামটি প্রতীকী—যা বাহ্যিক বিলাসিতার প্রতীক হলেও অন্তরে শূন্যতা প্রকাশ করে।
প্রশ্নঃ গল্পের শেষাংশের তাৎপর্য কী?
উত্তরঃ শেষাংশে বিলাসীর নিঃসঙ্গতা ও আত্মসমালোচনার মধ্য দিয়ে গল্পটি মানুষের অন্তর্জগতের বেদনা প্রকাশ করে।
প্রশ্নঃ লেখক সমাজের কোন পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন?
উত্তরঃ লেখক বোঝাতে চেয়েছেন, সমাজে কেবল ধনসম্পদ নয়, মানসিক সম্পর্ক ও মানবিকতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
প্রশ্নঃ “বিলাসী” গল্প থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিক্ষা পেতে পারে?
উত্তরঃ বাহ্যিক চাকচিক্য নয়, আন্তরিক সম্পর্ক ও নৈতিক জীবনের গুরুত্বই জীবনের আসল শিক্ষা।
প্রশ্নঃ গল্পের চরিত্রচিত্রণ কতটা সফল?
উত্তরঃ চরিত্রচিত্রণ অত্যন্ত বাস্তব ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে গভীর, বিশেষত বিলাসী চরিত্রের মানসিক দ্বন্দ্ব পাঠকের মনে দাগ ফেলে।
প্রশ্নঃ এই গল্পকে সমাজমনস্ক গল্প বলা যায় কেন?
উত্তরঃ কারণ এতে সমাজের ধনী শ্রেণির জীবনযাত্রা, নৈতিক অবক্ষয় ও মানবিক সংকটকে লেখক গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন।
বিলাসী গল্পের MCQ
বিলাসী গল্পের লেখক কে?
ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
খ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
গ) বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
ঘ) জীবনানন্দ দাশ
বিলাসী গল্পে মূল নারী চরিত্রের নাম কী?
ক) বিলাসী
খ) শীলা
গ) ফুল্মা
ঘ) রাধা
বিলাসী গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের বাগানে কী ছিল?
ক) আম-কাঠাল বাগান
খ) ধানক্ষেত
গ) সবজি বাগান
ঘ) ফুলবাগান
বিলাসী গল্পে মূল সামাজিক বিষয়টি কী ছিল?
ক) শিক্ষা প্রচার
খ) অর্থনৈতিক উন্নয়ন
গ) প্রেম ও বিরহ
ঘ) বর্ণবৈষম্য ও সামাজিক অমানবিকতা
বিলাসী গল্পে বিলাসী কোন কাজ করে দেখান?
ক) ডাক্তারিতে
খ) সাপুড়দের কাজ প্রতিহত করে
গ) শিক্ষকতা করে
ঘ) ব্যবসা করে
বিলাসী গল্পে বাগানের অংশীদার কারা?
ক) মৃত্যুঞ্জয় একলা
খ) দুপুরবেলা ছেলেরা
গ) গ্রামের ব্রাহ্মণ
ঘ) শহর থেকে আগত
বিলাসী গল্পে “অন্ন‑পাপ” বলতে কার প্রতি দোষ দেওয়া হয়?
ক) বিলাসীর প্রতি
খ) মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি
গ) সাপুড়ের মেয়ের প্রতি
ঘ) শিক্ষকের প্রতি
বিলাসী গল্পে সময়কাল কোন সমাজের?
ক) আধুনিক নগর
খ) গ্রামীণ পুরনো সমাজ
গ) ভবিষ্যতের সমাজ
ঘ) উপনিবেশিক শহর
বিলাসী গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়োর কাজ কী ছিল?
ক) সাপ ধরতো
খ) নালিশ দিতো ও দুর্নাম রটাতো
গ) শিক্ষক ছিলো
ঘ) আম বিক্রি করতো
বিলাসী গল্পে “মন্ত্র” কী কাজে ব্যবহার হয়?
ক) ব্যবসায়
খ) সাপ ধরার কাজে
গ) গান গাইবার কাজে
ঘ) হাসপাতালে চিকিৎসায়
বিলাসী গল্পে বিলাসীর বয়স প্রায় কত ছিল?
ক) ১৫ বছর
খ) আঠারো বছর বা তার আশেপাশে
গ) ২২ বছর
ঘ) ৩০ বছর
বিলাসী গল্পে সবচেয়ে বড় সামাজিক বাধা কী ছিল?
ক) পরিবারের রাজস্ব সংকট
খ) বর্ণবৈষম্য ও সামাজিক অবহেলা
গ) কাজের অভাব
ঘ) শিক্ষার ঘাটতি
বিলাসী গল্পে বিলাসীর চরিত্রকে বর্ণনা করলে যা বলা যায়?
ক) নিষ্ঠুর
খ) উদার ও দায়িত্ববান
গ) অলস
ঘ) স্বার্থপর
বিলাসী গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের বাগান কত বিঘার ছিল?
ক) পঁচিশ বিঘা
খ) দশ বিঘা
গ) একশ বিঘা
ঘ) পাঁচ বিঘা
বিলাসী গল্পে সাপুড়দের কাজ কী ছিল?
ক) আম বিক্রি
খ) শিক্ষা দেওয়া
গ) সাপ ধরার ব্যবসা
ঘ) কৃষি কাজ
বিলাসী গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের পড়াশোনা কোথায় হয়েছিল?
ক) শহরে স্কুলে
খ) কলেজে
গ) বিশ্ববিদ্যালয়ে
ঘ) গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
বিলাসী গল্পের শেষ দিকে বিলাসীর ভাগ্য কী হয়?
ক) সুখী পরিবারে বসবাস
খ) সামাজিক অন্যায় এবং কুসংস্কারের শিকার হয়ে মারা যায়
গ) বিদেশে চলে যায়
ঘ) ধনী হয়ে ওঠে
বিলাসী গল্পে চরিত্রদের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী কে ছিল?
ক) মৃত্যুঞ্জয়
খ) সাপুড়ের মেয়ে
গ) বিলাসী
ঘ) গ্রামের প্রধান
বিলাসী গল্পে সামাজিক শিক্ষা কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে?
ক) অর্থ সংগ্রহ
খ) শিক্ষা প্রসার
গ) বর্ণবৈষম্য ও ন্যায্যতা
ঘ) প্রযুক্তি উন্নয়ন
বিলাসী গল্পে বিলাসীর বন্ধুদের ভূমিকা কেমন ছিল?
ক) নির্দয়
খ) সহায়ক
গ) সমর্থনশীল এবং বিশ্বস্ত
ঘ) উদাসীন
বিলাসী গল্পের সময়কাল মূলত কোন যুগের?
ক) আধুনিক শহর
খ) ভবিষ্যত
গ) গ্রামীণ পুরনো সমাজ
ঘ) উপনিবেশিক নগর
বিলাসী গল্পের মূল বার্তা কী?
ক) ধনসম্পদই জীবনের উদ্দেশ্য
খ) কেবল বিনোদন
গ) দৃঢ়তা, সাহস ও মানবিক দায়িত্ববোধ
ঘ) প্রেমে জেতা
বিলাসী গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের বন্ধুর নাম কী ছিল?
ক) রমেশ
খ) সদাশিব
গ) মাধব
ঘ) ভাস্কর
বিলাসী গল্পে বিলাসীর পরিবারের সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল?
ক) ধনী
খ) মধ্যবিত্ত
গ) গরীব
ঘ) রাজবংশীয়
বিলাসী গল্পে বিলাসীর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু কে ছিল?
ক) শিক্ষিকা
খ) শীলা
গ) ফুল্মা
ঘ) রাধা
বিলাসী গল্পে মৃত্যুঞ্জয় কেন বিলাসীর প্রতি দয়া দেখাতো?
ক) প্রেমের কারণে
খ) স্বার্থপরতার কারণে
গ) মানবিক কারণে
ঘ) পরিশ্রমের কারণে
বিলাসী গল্পে কোন উৎসব বা অনুষ্ঠান উল্লেখ আছে?
ক) পুণ্য উৎসব
খ) বিজয়া দশমী
গ) শারদীয় দুর্গাপূজা
ঘ) নববর্ষ
বিলাসী গল্পে সাপুড়ের মেয়ের নাম কী ছিল?
ক) শীলা
খ) ফুল্মা
গ) বিলাসী
ঘ) রাধা
বিলাসী গল্পে বাগান বিক্রির সময় কারা হস্তক্ষেপ করেছিল?
ক) পুলিশ
খ) বন্ধুরা
গ) গ্রামবাসী ও স্থানীয় সরকার
ঘ) শিক্ষক
বিলাসী গল্পে মৃত্যুঞ্জয় কেন সন্মান পায় না?
ক) গরীব ছিলো
খ) নিম্নবর্ণের ছিলো
গ) অপরাধী ছিলো
ঘ) শিক্ষাহীন ছিলো
