full scren ads

খাজা মইনুদ্দিন চিশতী জীবনী | প্রশ্ন উত্তর সাধারণ জ্ঞান

খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুফি সাধক ও ইসলাম প্রচারক। তিনি “গরীব নবাজ” নামেও সুপরিচিত, যার অর্থ “গরীবদের অভিভাবক”। তাঁর জন্ম ১১৪১ খ্রিস্টাব্দে সিজিস্তান প্রদেশের চিশ্ত গ্রামে (বর্তমান আফগানিস্তানে)। তিনি ছিলেন খাজা গিয়াসুদ্দিন ও বীবি মাহ নীজার সন্তান।

তরুণ বয়সে তিনি গভীরভাবে আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করেন এবং বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে ইসলামী জ্ঞান ও সুফিবাদের শিক্ষা লাভ করেন। তিনি বাগদাদ, সমরকন্দ, হেরাতসহ অনেক স্থানে গিয়েছিলেন। পরে তিনি ভারতে এসে আজমিরে স্থায়ী হন এবং ইসলামের দাওয়াত প্রচার করতে থাকেন।

খাজা মইনুদ্দিন চিশতী ছিলেন চিশতিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর আদর্শ ছিল প্রেম, সহানুভূতি ও মানবসেবা। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে তিনি সকল মানুষকে ভালোবাসতেন। আজমির শরীফে তাঁর দরগা আজও ভক্ত ও তীর্থযাত্রীদের অন্যতম গন্তব্য।

তিনি ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী “উরস শরীফ” নামে পরিচিত, যা আজমিরে প্রতিবছর অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়।

খাজা মইনুদ্দিন চিশতী জীবনী,

খাজা মইনুদ্দিন চিশতী সম্পর্কিত সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.) কে ছিলেন?
উত্তর: তিনি ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার বিখ্যাত সুফি সাধক ও ইসলামের প্রচারক।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: আফগানিস্তানের সিজিস্তান প্রদেশের চিশ্ত গ্রামে।

প্রশ্ন: তাঁর পিতার নাম কী ছিল?
উত্তর: খাজা গিয়াসুদ্দিন।

প্রশ্ন: তাঁর মাতার নাম কী ছিল?
উত্তর: বীবি মাহ নীজা।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কোন তরিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন?
উত্তর: চিশতিয়া তরিকার।

প্রশ্ন: তিনি ভারতে কোন স্থানে ইসলাম প্রচার করেন?
উত্তর: আজমিরে।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতীকে আর কী নামে ডাকা হয়?
উত্তর: গরীব নবাজ।

প্রশ্ন: গরীব নবাজ অর্থ কী?
উত্তর: গরীবদের অভিভাবক।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কোন শতকে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: দ্বাদশ (১২তম) শতকে।

প্রশ্ন: তাঁর মৃত্যু কবে হয়?
উত্তর: ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর দরগা কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: আজমির, রাজস্থান (ভারত)।

প্রশ্ন: তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী কী নামে পরিচিত?
উত্তর: উরস শরীফ।

প্রশ্ন: তাঁর প্রধান আদর্শ কী ছিল?
উত্তর: মানবতা, ভালোবাসা, সহনশীলতা ও আল্লাহর প্রেম।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী ইসলামের কোন ধারার অনুসারী ছিলেন?
উত্তর: সুফিবাদ বা তাসাউফের অনুসারী।

প্রশ্ন: তিনি কোন শহরে ইসলামের প্রচার কেন্দ্র স্থাপন করেন?
উত্তর: আজমিরে।

প্রশ্ন: তাঁর অনুসারীদের মধ্যে কারা বিখ্যাত ছিলেন?
উত্তর: খাজা কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকী, বাবাফরিদ, নিজামুদ্দিন আউলিয়া প্রমুখ।

প্রশ্ন: চিশতিয়া তরিকার মূল বার্তা কী ছিল?
উত্তর: আল্লাহর ভালোবাসা ও মানবতার সেবা।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কাদের মধ্যে ইসলাম প্রচার করেন?
উত্তর: ভারতবর্ষের হিন্দু-মুসলমানসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে।

প্রশ্ন: আজমির শরীফে প্রতি বছর কী অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর: তাঁর উরস শরীফ উৎসব।

প্রশ্ন: তাঁর শিক্ষা পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
উত্তর: নম্রতা, সহনশীলতা, ভালোবাসা ও আত্মশুদ্ধি।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর পুরো নাম কী ছিল?
উত্তর: খাজা মইনুদ্দিন হাসান চিশতী (রহ.)।

প্রশ্ন: তিনি কোন দেশে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: আফগানিস্তান।

প্রশ্ন: তিনি ইসলামের কোন শাখার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর: সুফিবাদ বা তাসাউফ।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী ভারতে আসেন কোন যুগে?
উত্তর: দ্বাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে।

প্রশ্ন: আজমির কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: ভারতের রাজস্থান রাজ্যে।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (রহ.)-এর দরগা কেন বিখ্যাত?
উত্তর: এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম পবিত্র সুফি তীর্থস্থান।

প্রশ্ন: তাঁর অনুসারীরা তাঁকে কী নামে সম্বোধন করতেন?
উত্তর: খাজা গরীব নবাজ।

প্রশ্ন: গরীব নবাজ উপাধিটি কে দিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়?
উত্তর: তাঁর অনুসারীরা, গরীবদের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কারণে।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কোন ইসলামী খলিফার বংশধর ছিলেন বলে বলা হয়?
উত্তর: ইমাম হুসাইন (রা.)-এর বংশধর।

প্রশ্ন: তিনি তরুণ বয়সে কোন বিষয়ে গভীরভাবে অনুরাগী ছিলেন?
উত্তর: ইলম (জ্ঞান) ও ইবাদত।

প্রশ্ন: তিনি কাদের থেকে সুফিবাদের শিক্ষা গ্রহণ করেন?
উত্তর: খাজা উসমান হারুনি (রহ.)।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর প্রধান গ্রন্থ কোনটি বলে মনে করা হয়?
উত্তর: "আনিসুল আরবাহ"।

প্রশ্ন: চিশতিয়া তরিকার মূল নীতিগুলি কী?
উত্তর: ভালোবাসা, সহনশীলতা, মানবসেবা, আল্লাহর প্রেম।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কোন ভাষায় প্রচার কাজ করতেন?
উত্তর: ফারসি ও স্থানীয় ভাষায়।

প্রশ্ন: তাঁর ইসলামী দাওয়াতের মূল লক্ষ্য কী ছিল?
উত্তর: মানব হৃদয়ে ঈমান ও প্রেমের বীজ বপন করা।

প্রশ্ন: তাঁর উরস কবে পালিত হয়?
উত্তর: রাজব মাসের ৬ তারিখে।

প্রশ্ন: আজমির শরীফে তাঁর দরগায় প্রতি বছর কতজন তীর্থযাত্রী যান?
উত্তর: লাখ লাখ মুসলিম ও অমুসলিম ভক্ত।

প্রশ্ন: কোন মুসলিম সম্রাট খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা রাখতেন?
উত্তর: সম্রাট আকবর।

প্রশ্ন: সম্রাট আকবর কতবার আজমির শরীফ সফর করেছিলেন?
উত্তর: তিনবার।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর মৃত্যুর স্থান কোথায়?
উত্তর: আজমির।

প্রশ্ন: আজমির শরীফের দরগায় কী ধরনের উৎসব হয়?
উত্তর: উরস শরীফ, মিলাদ, ওয়াজ মাহফিল ইত্যাদি।

প্রশ্ন: চিশতিয়া তরিকার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ সুফি কে ছিলেন?
উত্তর: খাজা কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকী (রহ.)।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর সময় ভারতে কোন রাজা শাসন করতেন?
উত্তর: মুহাম্মদ ঘোরী।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কাদের কাছে ইসলাম প্রচার করতেন?
উত্তর: সাধারণ জনগণ ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষের কাছে।

প্রশ্ন: তাঁর দরগায় কারা প্রবেশ করতে পারে?
উত্তর: ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ।

প্রশ্ন: তিনি ইসলামের কোন দিকটিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন?
উত্তর: ভালোবাসা ও মানবতার বার্তা।

প্রশ্ন: তাঁর জীবন আমাদের কী শিক্ষা দেয়?
উত্তর: আল্লাহর প্রেম, সহানুভূতি ও বিনয়।

প্রশ্ন: “চিশতী” শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: চিশ্ত নামক স্থান থেকে আগত ব্যক্তি।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর বংশধররা কোথায় বসবাস করেন?
উত্তর: আজমির ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে।

প্রশ্ন: তাঁর শিক্ষা ভারতের কোন সংস্কৃতিতে প্রভাব ফেলেছিল?
উত্তর: হিন্দু-মুসলিম মিলন সংস্কৃতি বা গঙ্গা-যমুনা সংস্কৃতিতে।

প্রশ্ন: তিনি কোন ধরনের জীবনযাপন করতেন?
উত্তর: সরল ও ত্যাগী জীবন।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কেমন চরিত্রের অধিকারী ছিলেন?
উত্তর: নম্র, দয়ালু ও আল্লাহভীরু।

প্রশ্ন: তাঁর দরগায় কোন স্থাপত্যশৈলীর প্রভাব দেখা যায়?
উত্তর: মুঘল ও রাজপুত স্থাপত্যের মিশ্রণ।

প্রশ্ন: উরস শরীফে প্রধানত কী হয়?
উত্তর: দরুদ পাঠ, কিরাত, মিলাদ ও খাদ্য বিতরণ।

প্রশ্ন: তাঁর দরগায় কোন বিখ্যাত কাওয়ালি শিল্পীরা গান করেন?
উত্তর: ভারতের অনেক বিখ্যাত সুফি কাওয়ালরা।

প্রশ্ন: সুফিবাদে খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর অবস্থান কেমন?
উত্তর: সর্বোচ্চ শ্রদ্ধেয় ও প্রভাবশালী সুফি সাধকদের একজন।

প্রশ্ন: তাঁর শিক্ষার প্রভাব আজও কোথায় দেখা যায়?
উত্তর: ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়ায়।

প্রশ্ন: খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কোন বার্তা প্রচার করেছিলেন?
উত্তর: “ভালোবাসাই হলো আল্লাহর পথে পৌঁছানোর সর্বোত্তম উপায়।”

প্রশ্ন: তাঁর জীবনের মূলমন্ত্র কী ছিল?
উত্তর: “মানব সেবা মানেই আল্লাহর সেবা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url